এবার দেশব্যাপী ডিজিটাল কোরবানির হাটের যাত্রা শুরু হয়েছে। বৃহৎ পরিসরে শুরু হওয়া এ ডিজিটাল হাটে সারাদেশের খামারিরা পশু বিক্রি করার সুযোগ পাবেন। ক্রেতারাও নিজের ইচ্ছে মতো দেখেশুনে পশু কিনতে পারবেন। 

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) দুপুরে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এ ডিজিটাল হাট উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম। 

এখন থেকে ক্রেতারা https://digitalhaat.net- এ ওয়েবসাইটে গিয়ে পছন্দমতো পশু কিনতে পারবেন। বিক্রেতা অর্থাৎ খামারিরাও নিবন্ধিত হয়ে এ হাটে তাদের পশু বিক্রি করতে পারবেন। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী রেজাউল করিম বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ঘুরে দাঁড়াতে আমরা প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। মাছ, মাংস বিক্রি যেন ব্যাহত না হয় সে ব্যবস্থাও নিয়েছি। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা আমাদের অনেক বেশি সহায়তা করেছে।

তিনি জানান, মাঠ পর্যায়ে আমাদের মন্ত্রণালয়ের ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ২০০ জনের বেশি কর্মী অসুস্থতা নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। দেশের পুষ্টি, আমিষের চাহিদা পূরণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এখাতে আমাদের প্রায় দেড় কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল হাট সবার জন্যে নিরাপদ। আমরা নিরাপত্তার দিক অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে এ হাট চালু করেছি। এখানে প্রতারণার সুযোগ নেই। সবশেষে তিনি ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি কোরবানির পশু কেনেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এরইমধ্যে দেশে প্রায় ১৯০০ এর মতো সামাজিক মাধ্যমসহ অনলাইন প্লাটফর্মে কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে। এসব হাটে ১১শ কোটি টাকার বেশি পশু বিক্রি হয়েছে। গত ২ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত ১১ দিনে অনলাইনে এসব পশু বিক্রি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব অনলাইন বাজারে গরু, ছাগল ও ভেড়ার ছবি আপলোড হয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৫৯০টি।

গত ১১ দিনে ১ লাখ ৫৭ হাজার ২৮৮টি পশু বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১১৬ কোটি ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৩০০ টাকায়। বাজার বসেছে ১ হাজার ৫৬২টি। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনায় এবার অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অধিক করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী সব জেলা-উপজেলার কোরবানির পশুর ক্রেতা ও বিক্রেতাদের একই প্ল্যাটফর্মে আনার লক্ষ্যে ‘দেশব্যাপী ডিজিটাল হাট’ উদ্বোধন করা হলো।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও ই-ক্যাবের যৌথ উদ্যোগে এবং এটুআই-এর কারিগরি সহযোগিতায় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ এবং এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. আব্দুল মান্নান। 

ডিজিটাল এ হাটের মাধ্যমে বিক্রি হওয়া কোরবানির পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ, পশু সংরক্ষণের নিরাপত্তা দেওয়া, পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পশু চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়গুলো ডিএনসিসি নিশ্চিত করবে। ডিএনসিসি, ই-ক্যাব ও বিডিএফএর যৌথ ব্যবস্থাপনায় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও এটুআইয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ডিজিটাল পশুর হাট শুরু হয়। 

একে/জেডএস