প্রবাসীসহ অন্যান্য যাত্রীদের আকাশপথে ভ্রমণকে আরামদায়ক করতে ঢাকা-দুবাই রুটে ফ্লাইট চালু করেছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

সােমবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে ঢাকা-দুবাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। দুবাই ইউএস-বাংলার দশম আন্তর্জাতিক রুট।

বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভবনে নতুন এ যাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।

এসময় তিনি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্য কামনা করে বলেন, বাংলাদেশ থেকে দীর্ঘদিন পর কোনো বেসরকারি এয়ারলাইন্স দুবাই রুটে ফ্লাইট চালু করেছে। সেজন্য এ মুহূর্তটা আমার জন্য খুবই আনন্দঘন ও গর্বের। ইউএস-বাংলা এ মহামারির মধ্যে নিজেদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে ও নতুন রুট চালু করায় আমি সত্যিই গর্বিত, বেবিচক গর্বিত। 

একটি দেশের যোগাযোগ যত বাড়বে, তত বেশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। আমরা চাই, ইউএস-বাংলা আরও বেশি বেশি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করুক।

এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, চেয়ারম্যান, বেবিচক

করোনাকালীন ইউএস-বাংলা শিডিউলড ও বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করায় সংস্থাটির কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ক্যাপ্টেন শিকদার মেজবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুবাইয়ে এ রুট চালুর মাধ্যমে ইউএস-বাংলা নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করলো। করোনায় পৃথিবী যখন স্তব্ধ তখন বেবিচক চেয়ারম্যানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা প্রথমে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করি। এরপর হাঁটি হাঁটি পা-পা করে এ অবস্থায় আসি।

এসময় বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতকে ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনের কারিগর হিসেবে তিনি উপস্থিত বেবিচকের সদস্য ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল আহসানকে ধন্যবাদ জানান।

কোভিড-১৯ সময়ে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশ ও আরব আমিরাতের দুদেশের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে দুবাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। ১৬৪ আসনের বােয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে উদ্বোধনী ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। প্রথম ফ্লাইটে ১৪০ জন যাত্রী ছিল।

সপ্তাহে প্রতি সােম, বৃহস্পতি, শুক্র ও রোববার ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় রাত ১০টায় দুবাই পৌঁছাবে। আবার দুবাই থেকে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং পরদিন সকাল ৬টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছাবে। 

এছাড়াও প্রতি মঙ্গলবার ঢাকা থেকে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় রাত ৯টায় দুবাই পৌঁছাবে। আবার দুবাই থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে দুবাই থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে ও পরদিন ভোর ৫টায় ঢাকায় পৌঁছাবে।

প্রতি বুধবার ঢাকা থেকে বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিটে দুবাই পৌঁছাবে । আবার দুবাই থেকে স্থানীয় সময় রাত ৮ টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং পরদিন ভাের ৩টা ২৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে ।

এছাড়া প্রতি শনিবার ঢাকা থেকে বিকেল ৫টায় দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় দুবাই পৌঁছাবে। আবার দুবাই থেকে স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং পরদিন ভাের ৪টা ২৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

ইউএস-বাংলা জানায়, ঢাকা-দুবাই রুটে ওয়ানওয়ের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ৫৪ হাজার ৯৯৯ টাকা এবং রিটার্ন ভাড়া ৭৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া দুবাই-ঢাকা রুটে ওয়ানওয়ের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ১ হাজার ৬৭০ আরব আমিরাত দিরহাম (এইডি) এবং রিটার্ন ভাড়া ২ হাজার ৭৫৩ এইডি নির্ধারণ করা হয়েছে। ভাড়ায় সব ধরনের ট্যাক্স ও সারচার্জ অন্তর্ভুক্ত।

এছাড়াও বিজনেস ক্লাসের জন্য ঢাকা-দুবাই রুটে ওয়ানওয়ে ৭৯ হাজার ২০০ টাকা এবং রিটার্ন ভাড়া ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫২৬। দুবাই-ঢাকা রুটে বিজনেস ক্লাসের ওয়ানওয়ে ভাড়া ২ হাজার ৬২০ এইডি এবং রিটার্ন ভাড়া ৪ হাজার ৪৫৩ এইডি।

এআর/এসএম