রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

সেশনজট নিরসন, আবাসন-সংকট নিরসন, শেণিকক্ষ সংকট নিরসন বৈধ বিভগীয় প্রধান নিয়োগ, উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে উপস্থিতি, নির্ধারিত সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া, দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করা, শিক্ষার্থীদের হয়রানি রোধ, শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা, প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ এবং আন্দোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার―এমন নানামুখী আন্দোলনে দিনভর উত্তাল থাকছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। বেশ কিছুদিন থেকে এসব আন্দোলন হয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বিত সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ ও আন্দোলনে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্তর থেকে এক মৌন মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সাময়িক অবস্থানের মাধ্যমে শেষ হয়।

একই দাবিতে দুপুর সাড়ে ১২টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।

এ সময় রংপুর ছাত্রফ্রন্ট রংপুর মহানগর সভাপতি ও সাবেক বেরোবি সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা বলেন, উপাচার্যের কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তার ধারাবাহিক অনুপস্থিতি শিক্ষার্থীদের সেশনজট বাড়িয়ে দিচ্ছে। তার কারণেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তার স্বৈরাচারী নিষেধাজ্ঞা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।

ত্রিপুরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অতীতের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। বর্তমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান না করা হলে ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন করা হবে।

এদিকে ইংরেজি বিভাগের একটি কোর্সে নম্বর কম দেওয়ায় আত্মহত্যার হুমকি ও আন্দোলন করছেন সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী ইংরেজি বিভাগের অফিস কক্ষের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অ্যাসাইমেন্ট, প্রেজেন্টেশন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই মানসিকভাবে টর্চার করে যাচ্ছেন এই শিক্ষক। আমাদের অন্য সব স্যারের কোর্সে এমনকি বাকি সাতটি সেমিস্টারের রেজাল্ট ভালো থাকা সত্ত্বেও এই শিক্ষকের একক স্বেচ্চারিতায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল (০৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টায় রংপুর নগরীর তাজহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌটুসি রায়।

এ ছাড়া প্রতিদিনই নানা আন্দোলনে মুখর থাকছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সদুত্তর মিলছে না।

শিপন তালুকদার/এনএ