‘কেরানীগঞ্জে আমার নানা খান বাহাদুর শামসুদ্দিন আহমেদের বাড়িতে আওয়ামী লীগের অনেক গোপন বৈঠক হত। নানা শুধু বঙ্গবন্ধুর ব্যবহারের জন্য একটি পানসি নৌকা বানিয়ে সদরঘাটে রেখেছিলেন। পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যখনই কোনো ঝামেলা করত, তখনই নানা নৌকা পাঠিয়ে তাকে নিয়ে আসতেন’।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. শামসুদ্দোহা খন্দকার এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ইউনিভার্সিটির সেমিনার কক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড. মো. শামসুদ্দোহা খন্দকার।

তিনি বলেন, ‘নানার বাড়িতে ৩৫টি কক্ষ ছিল। সেখানে বঙ্গবন্ধুর জন্য একটি খুব সুরক্ষিত কক্ষ ছিল। সেই কক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্য খাবার-দাবার নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু বাড়ির লোকজনের অনুমতি ছিল। বঙ্গবন্ধু তার অনেক আলোচনায় আমার নানা বাড়ির প্রসঙ্গ টেনেছেন। বিভিন্ন দিক থেকে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছিলেন নানা।’

শামসুদ্দোহা খন্দকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মাত্র ১৬ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা আমার শরীরের বাম কাঁধের ওপর থেকে পেট বরাবর নিচ পর্যন্ত অংশে বেয়নেট দিয়ে চিড়ে দিয়েছিল। কিন্তু তার আহ্বান আমাকে এতোটাই আলোড়িত করেছিল যে, সেই বেয়নেটের আঘাত আমার কাছে তুচ্ছ মনে হয়েছিল।’

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনিও বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন হিমালয়সম। তিনি তার মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে মাত্র ৫৫ বছরের জীবনে এক অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছেন।

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্বাস আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. আবুল বাশার খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আনোয়ার জাহিদ প্রমুখ।

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এমএইচএস