ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছুদের সহায়তা করতে এসে নেতাকর্মীরা মারামারিতে জড়ান। এতে একজন আহত হয়েছেন।

শনিবার দুপুর ১২টায় কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম জামান সোহানের অনুসারী ও কবি জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের অনুসারীরা মারামারিতে জড়ান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী তায়েব বিন ইসলাম তুর্য জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের কর্মী নজরুল ইসলামের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করলে জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের কর্মীরাও সূর্যসেন হলের ওই কর্মীকে মারধর করেন।

 এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর সূর্যসেন হল ছাত্রলীগ কর্মী তুষার হোসেনের নেতৃত্বে একই হলের নেতাকর্মীরা জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের কর্মী মারুফ হাসান শাহিনকে মারতে উদ্ধত হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমেদ সোহান সেখানে গিয়ে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শান্ত করেন।

এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে এক সাংবাদিকের ওপর সুর্যসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী তুষার হোসেন মারতে উদ্ধত হন। এতে সেখানে অবস্থানরত ভর্তি পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

কবি জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ভর্তিচ্ছুদের সেবা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে বসেছিলাম। আমাদের দিকের কেউ আম পাড়তে ইট নিক্ষেপ করে, যা তুর্যের সামনে পড়ে। কে নিক্ষেপ করেছিল তা খেয়াল করিনি। কিন্তু তুর্য এসেই আমাকে আঘাত করা শুরু করে। অথচ আমি এর কিছুই জানি না। সে জুনিয়র জেনে পরে আমরা কয়েকজন তাকে একটু শাসন করেছি।

সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তুর্য বলেন, আমার গায়ে একটা ইট এলে আমি উনাকে (নজরুল) ধরি। কোনো আঘাত করিনি। জুনিয়র হয়ে ধরলাম কেন সেজন্য তারা আমার ওপরে হামলা করেছে। পরে আমি হাসপাতালে গিয়েছি। আমরা কারো ওপর হামলা করিনি।

সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী তুষার হোসেন বলেন, বিষয়টি মিথ্যা। আমি কোনো সাংবাদিককে মারতে যাইনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম জামান খান সোহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের একজন কর্মীর ওপর কবি জসীমউদ্দিন হলের কয়েকজন হামলা করেছে। পরে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।

কবি জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়েছি। তেমন কিছু না। সামান্য একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের সব নেতাকর্মী আজ দুদিন ভর্তিচ্ছুদের সেবা দিচ্ছে। এমন কোনো ঘটনা সম্পর্কে জানি না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা একটি জাতীয় পরীক্ষা। আমরা সকলের সহযোগিতা পাচ্ছি। কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করবে না, এটা আমাদের প্রত্যাশা। এরপরও কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আমরা প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

এইচআর