ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানকে ‘গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মানহানির অপচেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। 

বুধবার (২২ জুন) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সই করা এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ আনা হয়। পাশাপাশি ঘরোয়া অনুষ্ঠানকে ‘গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ আখ্যা দেওয়ার প্রতিবাদও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি ঘরোয়া সামাজিক অনুষ্ঠানকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন বানচালের উদ্দেশ্যে ‘গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সভাপতি ও সিনেট সদস্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে অসম্মানজনক বক্তব্য দিয়ে তাদের হেয়প্রতিপন্ন এবং শাস্তি দাবির ঘটনায় আমরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের একটি মিলনস্থল। দল-মত নির্বিশেষে ক্লাবের সদস্য, শিক্ষক ও কর্মকতারা এ ক্লাবকে তাদের অবসর বিনোদনের একটি কেন্দ্রস্থল হিসেবে ব্যবহার করেন। এখানে ক্লাব সদস্যরা তাদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদেরও নিয়ে আসেন। এমনকি এ ক্লাবে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের আগমনের ঘটনাও নজিরবিহীন নয়। এ নিয়ে শিক্ষক বা ক্লাব কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি বা বিরোধিতা অতীতে আমরা কখনো দেখিনি। কিন্তু গত ১৮ জুন ঘরোয়া একটি ছোট অনুষ্ঠানে বিনএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সস্ত্রীক অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে এই অনুষ্ঠানটিকে ‘গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ আখ্যা দিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক।

বিষয়টি সুস্থ মস্তিস্কের কারো নিকট বিশ্বাসযোগ্য হবে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব একটি উন্মুক্ত স্থানে অবস্থিত। এটি সম্পূর্ণরূপে সিসিটিভির আওতাযুক্ত। এমন একটি ক্লাবে অংশগ্রহণকারীরা সস্ত্রীক এসে গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক করবেন, তা সুস্থ মস্তিস্কের কারো নিকট বিশ্বাসযোগ্য হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ইতোমধ্যেই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। এখানে ভিন্নমতের উপস্থিতি সহ্য করার মতো নূন্যতম সৌজন্যতাবোধও আমরা দেখি না। ১৮ জুনের ঘটনাটি এরূপ কর্তৃত্ববাদী মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের সম্পর্কে যে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দিয়ে তাদের শাস্তি দাবি করা হচ্ছে, এ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করছি।

এইচআর/আরএইচ