রাবিতে হলের তালা ভাঙার হুমকি
রাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রক্টর অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান
ফেব্রুয়ারিতে হল না খুললে মার্চের প্রথম সপ্তাহে তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন রাবি শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে আন্দোলন করার জন্য জড়ো হতে থাকে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে আলোচনায় এ কথা জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীরা হলসহ ক্যাম্পাস খুলে দিতে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। এ সময় প্রক্টর তাদের জানান মঙ্গলবার (২৩) ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর কমিশনে (ইউজিসি) বৈঠকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করবেন উপাচার্য।
বিজ্ঞাপন
রাবি শিক্ষার্থী মানিক বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারে এতো মানুষ গিজগিজ করছে যে সেখানে হোটেলে আর জায়গা নেই। মানুষ খোলা আকাশের নিচে থাকছে, মসজিদ মাদ্রাসায় থাকছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোথাও মানুষের অভাব নেই। করোনা সমগ্র দেশের কোথাও নেই, শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। আমাদের বাবা-মা প্রত্যেকটা দিন জিজ্ঞেস করে, বাবা তোমার আর কতদিন আছে? অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ব্যাচের শিক্ষার্থীরা শেষ করে আমাদের সিনিয়র হয়ে গেছে। সে বিষয়গুলো প্রশাসনকে ভাবতে হবে।
আন্দোলনকারীরা জানান, আমাদের সহপাঠীরা অনেক দিন ধরে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকছে। কিছু পরীক্ষাও এর মধ্যে নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এখন মেসগুলোতে সিট পাওয়া যাচ্ছে না। একজনের সিটে ভাগাভাগি করে দুজন করে থাকছে। হলসহ ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার বিষয়টি যেহেতু সরকারের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে সেহেতু তারা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে যেন দ্রুত হলসহ ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীদের দাবি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে হাতেগোনা দুয়েকটা হল ছাড়া গণরুম নেই। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখানে হল খুলে দিলেও খুব একটা ঝুঁকির মুখে পড়বে না শিক্ষার্থীরা। এখানে এমনও শিক্ষার্থী আছে যাদের দু হাজার টাকা খরচ করে মেসে থাকার সামর্থ্য নেই, কিন্তু পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে তারা থাকছেন। করোনাতে যেখানে মানুষের আর্থিক অবস্থা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আছে সেখানে এটা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে যাচ্ছে।
প্রক্টর অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে উপাচার্যদের বৈঠক আছে। সেখানে জোরালোভাবে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। এখন পর্যন্ত সরকারের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ একটা বছর তারা ক্যাম্পাসের বাইরে আছে। স্বাভাবিকভাবে এটা তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। আমরাও চাই দ্রুত ক্যাম্পাস তাদের পদচারণায় মুখরিত হোক। শিক্ষার্থীদের ছাড়া আমরা কিছুই না। তারাই আমাদের প্রাণ।
মেশকাত মিশু/এসপি