রিয়াদ হোসাইন

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসাইনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে আহত হন ওই শিক্ষার্থী। পরে ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (৭ ফ্রেব্রুয়ারি) এ ঘটনার বিচার চেয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ৭টায় কুষ্টিয়া হাসপাতাল মোড় থেকে ক্যাম্পাসের বাসে ওঠেন রিয়াদ। বাসে উঠে সামনের দিকের যাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে থাকা ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী সামিউল ইসলাম সামনে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন। এ সময় রিয়াদকে সামনে সিট ধরা আছে জানিয়ে ভেতর দিয়ে না গিয়ে নেমে অন্য দরজা দিয়ে যেতে বলে। তার কথা না নেমে ভেতর দিয়ে সামনে যেতে চাইলে সামিউল ও তার সঙ্গে থাকা সঙ্গীরা দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। 

এরপর বাস ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে পৌঁছালে রিয়াদ নামামাত্রই তারা তার ওপর চড়াও হয়। এ সময় সামিউল তার সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, ছাত্রলীগকর্মী সিয়াম, নাবিলসহ ৭-৮ জন তাকে কিলঘুষি মারতে থাকে। এতে আহত হন ওই শিক্ষার্থী। পরে ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। মারধরকারী সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে আমার। এর থেকে বড় আফসোস কী আর হতে পারে? সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করল। আমি তাদের সকলের বিচার চাই। সকালে এ বিষয়ে প্রশাসন বরাবর আবেদন করব।

এ অভিযুক্ত সামিউল ইসলাম বলেন, বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় ওকে ভেতর দিয়ে যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে ওকে ডেকে বোঝাতে গেলে আমার হাত ঝাড়ি মেরে আবারও তর্কে লিপ্ত হয়। এ সময় ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হলে তাৎক্ষণিক হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি ধমকি দেইনি।

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি বাসে কথা কাটাকাটির পর ক্যাম্পাসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউলদের ওপর চড়াও হয়। এতে ধস্তাধস্তি হয়। এখন আবার দেখছি রিয়াদ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল আমরা বিষয়টি নিয়ে বসব। 

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বসে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তর বক্তব্য শুনে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেব।

রাকিব হোসেন/আরকে