অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের মৃত্যুতে শিক্ষা, রাজনীতি ও কূটনৈতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোকে কাতর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তার সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী বিশ্বাসই করতে পারছেন না তাদের প্রিয় স্যার আর নেই। সম্প্রতি ড. তারেক শামসুর রেহমান অবসরে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। প্রিয় শিক্ষকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন তার ছাত্র-ছাত্রীরা।

আরও পড়ুন : নিজ ফ্ল্যাট থেকে ড. তারেক শামসুর রেহমানের মরদেহ উদ্ধার

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম খান ( রাহাত) তার প্রিয় শিক্ষক সম্পর্কে লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কতো ইউনিক বিষয়ের শিক্ষা শুধু আপনার কাছ থেকেই পেয়েছিলাম স্যার! তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর ভূমিকা এবং তৎকালীন বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। এত সুন্দর করে স্যার আমাদের পড়িয়েছেন যে এখনো নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করি। দেশের খুবই অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে আমি একজন যে কি-না আমাদের স্বাধীন হওয়ার পেছনে বিশ্ব রাজনৈতিক খেলাটি খুব সুন্দরভাবে পর্যালোচনা করতে পারি!’

রাহাতের মতো আরও অনেকেই তারেক শামসুর রেহমানের সঙ্গে তাদের স্মৃতিগুলো প্রকাশ করছেন। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম লেখেন,‘আমাদের সরকার ও রাজনীতি বিভাগ ছেড়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে মিডিয়া কর্মীদের সঙ্গে তার সখ্য ছিল। সেই সুবাদে পরিচয় ছিল অনেক আগে থেকেই। আইনজীবী হওয়ার পর ফেসবুকে দেখে নিজে থেকেই শুভকামনা জানিয়েছিলেন। মৃত্যু সবারই হবে, তবে স্যারের এমন আকস্মিক মৃত্যু সত্যি হৃদয়বিদারক।’

খ্যাতিমান এই শিক্ষকের মৃত্যুর খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা শোক জানাচ্ছেন। শিক্ষকতা ও গবেষণার কাজে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন ড. তারেক শামসুর রেহমান। অনেক দেশে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।

আরও পড়ুন : বাথরুমের সামনে পড়ে ছিল তারেক শামসুর রেহমানের নিথর দেহ

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাব এনাম খান অগ্রজের চলে যাওয়াকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘তারেক স্যারের মতো প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিত্বের এভাবে চলে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতি। যা পূরণ হওয়ার নয়।’

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তরিকুল ইসলাম বলেন,‘তুলনামূলক রাজনীতির বিশ্লেষণে স্যার ছিলেন অনন্য। স্যার তার কীর্তির মাধ্যমে আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।’

উল্লেখ্য, শনিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে উত্তরা-১৮ নম্বর সেক্টরে রাজউকের আবাসিক প্রকল্পের দোলনচাপা ভবনের ১৩০৪ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে শামসুর রেহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এজেড/এসকেডি