বিকৃত ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে কথা বলায় শিক্ষক ড. মোহাম্মদ সারোয়ার ও আসিফ মাহতাবকে ব্র্যাক ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান থেকে বিরত থাকতে বলায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। 

রোববার (২৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরের স্মৃতি চিরন্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পাঠ্যবই থেকে ট্রান্সজেন্ডার চ্যাপ্টার বন্ধ করে নতুন কারিকুলাম তৈরি এবং দুজন শিক্ষকের সঙ্গে অন্যায় আচরণের জন্য ব্র্যাক ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে যথাযথ কারণ ব্যাখ্যাপূর্বক ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়। 

এসময় শিক্ষার্থীরা, ‘হিজড়াদের জন্য প্রয়োজন সঠিক কর্মসংস্থান, ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য প্রয়োজন মানসিক চিকিৎসা; জেন্ডার ইকুয়ালিটির নামে আমার দেশে ট্রান্স মতবাদ চলবে না; ট্রান্সজেন্ডারের অপর পিঠে সমকামিতা; Say ‘NO’ to LGBTQ; পুরুষের শরীরে নারী, নারীর শরীরে পুরুষ থাকে না, থাকে বিকৃত মস্তিষ্ক’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায়৷ 

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সারজিস আলম বলেন, হিজড়া সম্প্রদায় হলো শারীরিক ত্রুটিপূর্ণ অবস্থা কিন্তু ট্রান্সজেন্ডাররা হলো মানসিক সমস্যাগ্রস্ত মানুষ। আমাদের এখন থেকেই সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। অন্যথায় এ বিষয়টি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে এবং সমাজকে ধ্বংস করে দেবে। 

ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুলায়মান বলেন, আমরা এখানে জড়ো হয়েছি যেন এলজিবিটিকিউ আমাদের দেশে প্রভাব বিস্তার না করতে পারে। এই ব্যাপারে কথা বলেই আমাদের সম্মানিত দুজন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে৷ 

আজকে দেশের অ্যাকাডেমিক স্ট্রাকচার নষ্ট করতে এবং আমাদের শিশুদের মনে এই কলুষিত চিন্তাধারা প্রতিষ্ঠিত করতে বিদেশি এনজিওগুলো কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। তাই আমাদের এই বিষয়ে প্রতিবাদ করতে হবে এবং বিষয়টি যেন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। 

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা জিনার ধারে-কাছেও যেও না। যেসকল কাজ ব্যভিচারের দিকে নিয়ে যায় সেসব কাজও হারাম।’ আজকের ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুটি হলো এলজিবিটিকিউ এর একটি স্তর মাত্র। সুতরাং এটি অবশ্যই হারাম। ইসলামে ক্বওমে লুতের অনুসারীদের দেখা গেলে তাদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছে। তবে আমাদের দেশে যেহেতু ইসলামিক শাসন নেই সেহেতু এই আইন কার্যকর করা যাবে না। তবে আমাদের ইসলামিক সেন্টিমেন্ট বিরোধী যে কাজ চলছে সরকারকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এ বিষয় যেন দেশে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। 

তিনি বলেন, আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ পাঠ্যবই থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে আমাদের সংস্কৃতির বাইরের পশ্চিমা সভ্যতার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষী বিষয়গুলো মাদরাসার বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, যেন এ বিষয়গুলো আমলে নেওয়া হয়। এসব পরিবর্তন করে নতুন পাঠ্যক্রম শুরু করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে- ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা মঞ্জুর, আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী জামাল উদ্দিন মোহাম্মদ খালিদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। 

কেএইচ/এমএসএ