রাতদিন ছোটাছুটি করে টাকা, রক্ত ও ওষুধসহ যাবতীয় সব ব্যবস্থা করেও বাঁচানো সম্ভব হলো না বন্ধু সুমিকে। শিক্ষক, বন্ধু-সহপাঠী, পরিবারের প্রাণপণ চেষ্টাকে উপেক্ষা করে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের মেধাবী শিক্ষার্থী লুৎফুন্নেসা সুমি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। শনিবার (১ মে) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার বিভাগের সহপাঠীরা।

অ্যাবডোমিনাল টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে গত পাঁচ মাস যাবত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ঢাবির এই শিক্ষার্থী। পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে এক সময় সুমির চিকিৎসা যখন প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম, তখনই এগিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।

সুমির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ঢাবি নিরাপত্তা মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার বলেন, অর্থ সংকট দূর করতে আমরা ফান্ড সংগ্রহ করি। ফান্ডে সরাসরি ১৯,৯০০ টাকা আসে যা তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনেকে তাদের একাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠিয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ৫ লাখের বেশি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

এছাড়াও সুমির মৃত্যুতে শোক প্ৰকাশ করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান। তিনি বলেন, তার সহপাঠী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই চেষ্টা করেছেন। আমরা ছাত্র অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকেও চেষ্টা করেছি তাকে বাঁচাতে। কিন্তু সে আমাদের ছেড়ে চলে গেল। মাহে রমজানের উসিলায় আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক।

তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও তার সহপাঠী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।

স্মৃতিচারণ করে সহপাঠী সায়েদা সোলেমান রিম বলেন, আজ বেলা ১২টার পর সুমির অবস্থা বেশি খারাপ হতে থাকে। ডাক্তাররা নিশ্চিত হতে সময় নেন। এক পর্যায়ে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আমরা সুমিকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেছি। বহুদিন একসঙ্গে ক্লাস করেছি।

তিনি আরও বলেন, ক্লাসের রুটিন দেওয়ার সময় যখনই তারিখ লিখবো, হৃদয় কেঁপে উঠবে। আল্লাহ সুমিকে জান্নাত দান করুন।

এইচআর/এমএইচএস