ছবি: ইবরাজ হাসান মাহমুদ সামির

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের এক ক্যান্টিন কর্মচারীকে মারধর ও গালি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।মারধরের শিকার কর্মচারীর নাম বোরহান উদ্দিন। তিনি প্রায় এক মাস ধরে ফরহাদ হলের ক্যান্টিনে কাজ করছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম ইবরাজ হাসান মাহমুদ সামির। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের বিরতির সময় সামির ক্যান্টিনে খাবার খেতে যান। তখন কর্মচারী বোরহান উদ্দিন জানান, এখন বিরতি চলছে, মালিক নামাজে গেছেন, জুমার পর আসবেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সামির অশ্লীল ভাষায় গালাগাল শুরু করেন এবং একপর্যায়ে বোরহানের গালে দুটি থাপ্পড় মারেন। এ ঘটনার পর ভয়ে গতকাল শনিবার ক্যান্টিন বন্ধ রাখেন পরিচালক মাহবুব। তবে আজ থেকে আবার ক্যান্টিন চালু করেছেন বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে কর্মচারী বোরহান উদ্দিন বলেন, জুমার নামাজের জন্য গতকাল দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে খাবার দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মালিক নামাজে ছিলেন। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী আসলে আমি বলি, এখন খাবার দেওয়া বন্ধ, নামাজের পর আসবেন। এতেই ওই ছেলে (সামির) চিৎকার করে বলে মালিককে ফোন দিতে। আমি বলি, আপনারাই ফোন দেন। এরপরই সে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে আমার দিকে তেড়ে এসে চড়-থাপ্পড় মেরে ধাক্কা দিয়ে ক্যান্টিন থেকে বের করে দেয়।

অভিযুক্ত ইবরাজ হাসান মাহমুদ সামির ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে আমি ক্যান্টিনে যাই। এর আগে থেকেই মানসিকভাবে চাপে ছিলাম। তখন হয়তো ক্যান্টিনে বিরতি চলছিল, আমি জানতাম না। তবে তখনও কয়েকজনকে খাবার দেওয়া হচ্ছিল। আমি বলি, আমাকে খাবার দেন। সে বলে, এখন খাবার দেওয়া যাবে না, বিরতি চলছে। আমি বলি, দুইটার মধ্যে তো খাবার শেষ হয়ে যাবে। তখন সে আমাকে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় গালাগাল করে। আমি তখন বকা দিই, তবে তার গায়ে হাত দেইনি।

তিনি আরও বলেন, দুপুর ২টার পর আমি আবার ক্যান্টিনে গিয়ে খাবার খাচ্ছিলাম। তখন ক্যান্টিনের এক ছোট ছেলে আমার ভিডিও করছিল। আমার এক বড় ভাই সেটা দেখে ভিডিও ডিলিট করে। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র আমাকে মারতে তেড়ে আসে এবং দা আনতে যায়। তারপরও আমি বোরহানকে চার-পাঁচবার সরি বলেছি।

ক্যান্টিন পরিচালক মাহবুব বলেন, গতকাল মারধরের পর ক্যান্টিনের কর্মচারীরা ভয়ে পালিয়ে যায়। ফলে গতকাল ক্যান্টিন বন্ধ রাখা হয়। তবে আজকে শহীদ ফরহাদ হোসেন হল সংসদ নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের আশ্বাসে দুপুর থেকে আবার ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, তোমরা সাংবাদিকরা এসব বিষয় এত সিরিয়াসলি নাও কেন? একটা ছেলে এক কর্মচারীর গায়ে হাত তুলেছে- আমি কাল তাদের সঙ্গে কথা বলব। এগুলো ছোটখাটো বিষয়, তোমরা এগুলো এড়িয়ে চলো। এক ছেলে খেতে চেয়েছিল, কর্মচারী দেরি করেছে, তাই সে মেরেছে। সব শিক্ষার্থী কি এক মেজাজের হয়? ক্যান্টিনের কর্মচারীরা ভয় পেয়েছে, গতকাল আসেনি। তবে আমি আজ থেকে ক্যান্টিন চালু করার নির্দেশ দিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

আতিকুর রহমান/এআরবি