রাবিতে চাকরির দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্রলীগের তালা
উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেয়া চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতারা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নিয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতারা। সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে বাসভবনের গেটে ও ভবনের প্রধান ফটকে তালা দেন তারা।
তালা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ১৯৭৩ এর অ্যাক্ট অনুযায়ী চারটি বিশ্ববিদ্যালয় চলে। তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একটি। কয়েকদিন আগে দেখেছি উপাচার্যর ওপর কিছু কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে একটা নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে। এরই মধ্যে এডহক ভিত্তিতে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ফারুক বিশ্ববিদ্যালের এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি আরও বলেন, আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে জানতে চেয়েছি তারা এটি পারেন কি-না? তখন স্যার বলেছেন- এটা ৭৩ এর অ্যাক্টের লঙ্ঘন। তখন আমরা বলেছি আপনিতো ৭৩ এর অ্যাক্টের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারছেন না। স্যার যতক্ষণ না ব্যাখ্যা দিতে পারছেন ততক্ষণ আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে রেজিস্ট্রার দপ্তরে এডহক ভিত্তিতে জালাল নামে একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরি প্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন।
বিজ্ঞাপন
কিছুক্ষণ অবস্থানের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে চাকরিপ্রত্যাশী ও রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাদেকুল ইসলাম স্বপন এবং রাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছ হোসেনের নেতৃত্বে ছয়জনের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে যান। তবে উপাচার্য বিশ্রামে থাকায় তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেননি। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করলে বাহিরে এসে তারা উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এ বিষয়ে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এডহক ভিত্তিতে একজনের চাকরি হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কেন চাকরি হচ্ছে না সেটি জানতে আমরা উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রতিবন্ধী এক ছেলেকে চাকরি দেওয়ার জন্য। যেহেতু নিয়োগ বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে, তাই আমি সচিবকে জানিয়েছি। তিনি আমাকে নিয়োগ দিতে বলেছেন এবং নিয়োগ দিয়েছি। সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ নেতারা এসে চাকরির দাবি করে। আমি জানিয়েছি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন আমি নিয়োগ দিতে পারবো না।
উপাচার্যের বাসভবনে অবরুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান জানান, বাসভবনের মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং কয়েকজন সহকারী প্রক্টর অবরুদ্ধ আছেন।
আরএআর