করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আটকে থাকায় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সশরীরে শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে বেলা ১১টায় বিভাগটির স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রথম সেমিস্টার এবং দুপুর ২টায় স্নাতক শেষবর্ষের সপ্তম সেমিস্টারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দেড় ঘণ্টায় নেওয়া হয়।

পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরীক্ষার হলে দুই বর্ষের শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৫৩ শিক্ষার্থীকে আলাদা দুটি কক্ষে বসিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে বিভাগটি। একই পদ্ধতিতে দুপুরে স্নাতক শেষবর্ষের পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়।

স্নাতক সপ্তম সেমিস্টারের পরীক্ষার্থী গাজী হীরক বলেন, সেশনজট রোধে আমাদের বিভাগ অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, এটা খুবই ভালো একটি সিদ্ধান্ত। অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অনলাইনে ক্লাস ও মিডটার্ম দিতে গিয়ে আমরা অনেকেই বিড়ম্বনার শিকার হয়েছি। কারণ অনলাইনে ক্লাস বা পরীক্ষার জন্য আমাদের অনেকের ভালো মোবাইল বা ডিভাইস নেই। অনেক এলাকায় ইন্টারনেটের নেটওয়ার্ক ভালো না। যদি অনলাইনে পরীক্ষা হতো, তখন দেখা যেত পরীক্ষা দিতে গিয়ে অনেকে সুযোগ সুবিধার অভাবে বৈষম্যের শিকার হতো।

সশরীরে পরীক্ষার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আরেক শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম রবিন বলেন, অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়াটাকে আমরা সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানাই। কেননা অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট এখনও এরকম সাহস দেখাতে পারেনি। অত্যন্ত সুন্দরভাবে স্বাস্থ্যবিধিও মানা হয়েছে। দুটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল ডিস্টেন্স বজায় রেখে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার হলে ঢুকার সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্কের ব্যবস্থা ছিল। এরকম সুন্দর আয়োজনে আমরা সন্তুষ্ট।

এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল মনসুর আহাম্মদ বলেন, অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নানাবিধ সমস্যার কথা জানায় আমাদের। তারা অফলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে বিভাগের একাডেমিক কমিটিতে আলাপ-আলোচনার পর শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও সুবিধাকে প্রাধান্য দিয়ে অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের মাধ্যমে পরীক্ষার রুটিন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে পাঠানো হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটির অনুমোদন দেয়।

তিনি বলেন, সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলার পরিকল্পনা করছে। আজ পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলার ক্ষেত্রে ইতিবাচক দিক বলে আমি মনে করি।

এইচআর/এসএসএইচ