রাজীব মোহাম্মদ

অনলাইনে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাজীব মোহাম্মদ। এ সময় তিনি টের পান মায়ের কিছু হয়েছে। জুম প্লাটফর্মে কেঁদে দেন রাজীব। দায়িত্বরত শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা থেকে বের হওয়ার পর জানলেন, মা আর পৃথিবীতে নেই।

আজ রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল দশটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।

একই বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফ মিয়া বলেন, আজ সকালে আমাদের অনলাইন পরীক্ষা শুরু হয়। হঠাৎ রাজীব ম্যামকে ডাকা শুরু করে। এরমধ্যেই আমরা একটা চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাই। রাজীব কেঁদে দেয়। পরে ম্যাম বলেন- রাজীব, তোমার কী হয়েছে? রাজীব বলে, ম্যাম আমার আম্মুর কী যেন হয়েছে। আমাকে লিভ নিতে হবে। ম্যাম কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে রাজীবকে বের হওয়ার অনুমতি দেন। পরীক্ষা শেষে জানতে পারি রাজীবের আম্মু মারা গেছেন।

রাজীবের মায়ের মৃত্যুর পর ফেসবুকে স্ট্যাটাসে রাজীবের অন্য এক সহপাঠী আল আমিন সরকার লিখেছেন, অনলাইন পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শুরুর প্রায় ৩০ মিনিট পর হঠাৎ কান্নার শব্দ পেলাম। ডিসপ্লেতে তাকিয়ে দেখি বন্ধু রাজীবের চোখে পানি। রাজীব বলছিল, ম্যাম, ম্যাম, ম্যাম, আমি কি লিভ নিতে পারি? আমার মায়ের কী যেন হয়েছে!

এক মিনিট পর লিভ নেওয়ার অনুমতি পেলেন রাজীব। এইতো কিছুক্ষণ আগে শুনলাম তার মা আর ইহজগতে নেই! আমরা পরীক্ষা শেষ করে কেবলই একটা ফুরফুরে মেজাজে হাসিখুশিতে মেতে উঠছিলাম আর বন্ধুর জীবনে কত বড় পরীক্ষা হয়ে গেল। মৃত্যু কত নিষ্ঠুর। কখন ডাক আসবে কেউ জানে না। আল্লাহ উনাকে মাগফিরাত দান করে জান্নাত দান করুক এবং আমার বন্ধু ও তার পরিবারকে যেন ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন, আমিন।

অনলাইন পরীক্ষার পরিদর্শক এবং বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা নেহরীর খান বলেন, অনলাইন পরীক্ষা চলাকালে রাজীব বললেন তিনি মায়ের কাছে যাবেন। পরে লিভ নেন। পরীক্ষা শেষে আমরা জানতে পারি তার মা মারা গিয়েছেন। আমাদের বিভাগের সবার জন্য এটি মর্মান্তিক ঘটনা। তার মায়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

এইচআর/এইচকে