সিলেটের বিয়ানীবাজারের মাহফুজ আলম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে ট্রেনে এসেছেন চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, সিলেট থেকে ট্রেনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলে চড়ে ক্যাম্পাসে আসছি। সেজন্য প্রায় ১০ ঘণ্টার জার্নিতেও কষ্ট লাগেনি। কিন্তু বাসে আসলে কষ্ট হত। হাজারো শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম শহর থেকে চবিতে আসা-যাওয়ার জন্য শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করায় খুব উপকার হয়েছে।

শুধু মাহফুজই নয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে আগত ভর্তিচ্ছুদের সুবিধার্থে শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করায় খুশি শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। তারা বলেন, দেশের আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয় কিন্তু পরিবহন সেবা কেউ দেয়নি। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ভর্তিচ্ছুদের নির্বিঘ্নে বসবাসের সুযোগ দেওয়াতেও খুশি তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেনে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত ভর্তিচ্ছু ফেনীর সাইকা খানম। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে খুব দূরে নয় আমাদের বাড়ি। এলাকার অনেকেই এখানে পড়েন। তাদের কাছে শাটল ট্রেনের গল্প শুনেছি। তখন স্বপ্ন দেখতাম কখন এই ট্রেনে চড়তে পারব। এবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে শাটল ট্রেনে চড়লাম। ভালো লাগলেও ভয় কাজ করছে যদি চান্স না পাই!

নাটোর থেকে আসা রকিফ উদ্দিন নামের আরেক অভিভাবক জানালেন, আমি মেয়েকে নিয়ে নাটোর থেকে ঢাকা হয়ে এসেছি। আসার পথে বেগ পোহাতে হয়নি। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেনে চড়ে একদম ক্যাম্পাসের ভেতরে আসা গেছে। যাওয়ার সময়ও ট্রেনে যেতে পারব এজন্য চিন্তা মুক্ত। 

তবে বটলতলী স্টেশন থেকে আসার সময় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম থাকলেও ফেরার পথে বেশিরভাগ সময় ছিল উপচে পড়া ভীড়। স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না তেমনি মাস্ক পরার সংখ্যাটাও হাতে গোনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা এবং মাইকিং করা হলেও কার্যকর হয়নি সেগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আগতদের যাতায়াতের সুবিধার্থে শাটল ট্রেন চালু করে প্রশাসন। সে লক্ষ্যে পরীক্ষা চলাকালীন ট্রেনের শিডিউল প্রকাশ করে। শিডিউল অনুযায়ী মোট ১১দফায় শাটল ট্রেন চট্টগ্রাম নগরীর বটলতলী স্টেশন থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং ক্যাম্পাস থেকে শহরের উদ্যেশ্যে ছেড়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় আগতদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আমরা শাটল ট্রেন চালুর ব্যবস্থা করেছি। ২৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত এ সার্ভিস চলবে। প্রতিদিন শাটল ট্রেন ১১ বার করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসবে এবং যাবে। আশাকরি আগত ভর্তিচ্ছু এবং অভিভাবকদের যাতায়াতের ভোগান্তি লাঘব হবে।

এবারের ভর্তি পরীক্ষা ক্যাম্পাসে পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে প্রথম ধাপের পরীক্ষা। গতকাল এবং আজ ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ভর্তি পরীক্ষা চলবে আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত। চারটি ইউনিট ও দুইটি উপ-ইউনিটে ৪ হাজার ৯২৬টি আসনে ভর্তির জন্য আবেদন করেছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৩ জন ভর্তিচ্ছু। সে হিসেবে প্রতি আসনের জন্য লড়বে ৩৭ জন শিক্ষার্থী।

রুমান হাফিজ/আরআই