বিকেল চারটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজধানীর সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া প্রশাসন। তবে শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। তারা নানা স্লোগানে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।  
 
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে মাদরাসার অধ্যক্ষ প্রফেসর আলমগীর রহমান ও আল্লামা কাশগরী (রহ) হল ও ইব্রাহিম হলের সুপার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বিকেল চারটার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। 

মাদরাসা হলের সীমানায় অবস্থিত প্রধান হল সুপার এবং সহকারী হল সুপারের বাসভবন ভেঙে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) অনির্দিষ্টকালের জন্য মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর বুধবার সকালে মাদরাসার দুটি আবাসিক হলও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর সারা দিনের আন্দোলনের মুখে সন্ধ্যায় সংশোধিত নোটিশে পরীক্ষার্থীদের জন্য হল উন্মুক্ত করা হয়।

বৃহস্পতিবারের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করা, ক্যাম্পাসে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো এবং পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় হল বন্ধ ঘোষণা করা হলো। বিকেল চারটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হবে। 

অনভিপ্রেত যেকোনো ঘটনা এড়াতে বর্তমানে ঘটনাস্থলে চকবাজার থানা পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। এ বিষয়ে চকবাজার জোনের এডিসি এবং লালবাগ ডিভিশনের এডিসি (এডমিন) মো. কুদরত-এ-খোদা বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এখানে মাদরাসার শিক্ষকরা আসবেন এবং শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে হল খালি করবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না হয় আমরা সে বিষয়টি দেখছি।

হল বন্ধের সিদ্ধান্ত জানাতে বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ আল্লামা কাশগরী (রহ) হলের গেটের সামনে আসেন অধ্যক্ষ প্রফেসর আলমগীর রহমান, হল সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ মাদরাসা প্রশাসনের অন্যরা। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাদের দেখেই ‘অবৈধ সিদ্ধান্ত, মানি না মানব না’,  ‘পাঁচদফা দাবি মেনে নাও মেনে নাও’ ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন।

নাঈমুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছি। দাবিগুলো হলো- কোনো অবস্থায় আবাসিক হল বন্ধ করা যাবে না, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন করতে হবে, হল প্রাঙ্গণে অধিদফতর ভবন নির্মাণ করা যাবে না, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর আরোপিত সব হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে কোনো ধরনের বাণিজ্য করা চলবে না। আমাদের এসব দাবি মেনে নিতে হবে। অন্যথায় আমরা জীবন গেলেও হল ছাড়ব না।

তবে যেকোনো মূল্যেই হল খালি করার কথা জানিয়েছে আলিয়া মাদরাসা প্রশাসন। এ বিষয়ে হল সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কায় আমরা আবারও পরীক্ষার্থীসহ সবাইকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছি। কিছু সময়ের মধ্যেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করব।

আরএইচটি/আরএইচ