স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) জোনের বার্ষিক সাধারণ সভা ও দায়িত্ব হস্তান্তর-২০২১ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) অডিটরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাঁধন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জোনাল পরিষদের বিদায়ী সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক তৌহিদা রশীদ, বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি সেলিম রেজা, বাঁধনের উপদেষ্টা এসএম কুরবান আলী, বাঁধন ফাউন্ডেশনের সভাপতি রকিব আহমেদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ঢাবি জোনের ১৮টি হল ইউনিটের নেতাদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের কার্যকরী পরিষদের সভাপতি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজের শিক্ষার্থী মিনহাজ মাহমুদ হিমেল এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী গালিব আহমেদ শিশির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত কমিটির সদস্যগণ নতুন কমিটির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক অনুপম সরকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাঁধন ঢাবি জোন ২০২১ সালে মোট ৬৫৬৫ জনকে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দেয়। এর মধ্যে কলা ভবনে ৩৬৬ জন, শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ১২০ জন, মহান বিজয় দিবসে ১৯৩ জন, জোন অফিসে ২২৭ জন, ইউনিট সমূহের সহযোগিতায় ৫৫০৬ জন এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ডে ১৫৩ জনকে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে দেয়।

এছাড়া ২০২১ সালে ঢাবি জোন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছে ৭৪১৪ ব্যাগ এবং নতুন রক্তদাতা ১৩৮৩ জন।

অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’ এটি শুধু একটি স্লোগান নয়, এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। এর মাধ্যমে আমাদের সামাজিক ও আত্মার বন্ধনের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বাঁধনকে আমি শুধু সংগঠন হিসেবে দেখিনা, এটা আমাদের আত্মার বন্ধন। যখনই বাঁধনের শরণাপন্ন হয়েছি, তখনই উপকার পেয়েছি। জীবনের প্রয়োজনে বাঁধন সবসময় প্রস্তুত থাকে। বাঁধনের প্রত্যেকটি কর্মীই সত্যিকার অর্থে সামাজিক মূল্যবোধ ধারণ করে। তাদের কার্যক্রম সত্যিকার অর্থে প্রশংসার দাবিদার।

অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, বাঁধন মানেই রক্তের বন্ধন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। আমার কাছে মনে হয় বাঁধন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাত্র সংগঠন যেটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও মানবতার সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস মানে বাঁধনের ইতিহাস। আশা করছি বাঁধন এগিয়ে যাবে আপন গতিতে, আর্ত মানবতার সেবায়। মানুষের শ্রেণিবিন্যাস হওয়া উচিত রক্তের গ্রুপের মাধ্যমে, এটাই মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহৎপ্রাণ ও উদ্যমী কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাত ধরে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর একটি বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে বাঁধন। যা আজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল ইউনিট ও ১টি ইনস্টিটিউট ইউনিটসহ বাংলাদেশের ৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২টি জোন, ১৩৯টি ইউনিট ও ৩টি পরিবারের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এইচআর/আইএসএইচ