স্বপ্ন জয়ের নেশায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন সীতাকুণ্ড উপজেলার ফাহিমা আক্তার। মেধা তালিকায় স্থান পেলেও ভর্তি নিয়ে তৈরি হয় শঙ্কা। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর উচ্চ আদালতের রায়ে অবশেষে ভর্তির অনুমতি পেলেন অদম্য ফাহিমা। 

সেই আইনি লড়াইয়ে তার সঙ্গে অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো আরেক শিক্ষার্থী টাঙ্গাইলের জিনাতুল ফেরদৌস নাহিন। অধরা স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দিয়েছে তার চোখেও। 

ফাহিমা আক্তার এবং জিনাতুল ফেরদৌস নাহিন চবির ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে মেধা তালিকায় স্থান পান। তবে উচ্চমাধ্যমিকে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার কারণে ভর্তি নেয়নি প্রশাসন। অবশেষে ২৫ মাস পর আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) তারা চবিতে ভর্তির অনুমতি পেলেন। ফাহিমা আক্তার বিজ্ঞান অনুষদে এবং জিনাতুল ফেরদৌস কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে। 


জানা যায়, ওই দুই শিক্ষার্থী মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিলেও চবিতে প্রথমবারই ভর্তি পরীক্ষা দেন। তবুও ভর্তি হতে পারেননি তারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট করেন। তারই প্রেক্ষিতে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর নতুন এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ। আদালতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহবুব শফিক। শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি।

হাইকোর্ট রায় দিলেও সেই রায়ের কপি দেখানো সাপেক্ষে ভর্তি হতে পারবেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা হয়। এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সেই রায়ের কপি নিতে দীর্ঘদিন হাইকোর্ট ঘুরলেও তা সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন। এদিকে রায়ের কপি আনতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাকিব উদ্দিন চেষ্টা করেন। কয়েকমাসের প্রচেষ্টায় রাকিব উদ্দিন তা নিয়ে আসতে সক্ষম হন। 

২৫ মাস পর ভর্তি হতে পারার আনন্দে উচ্ছ্বসিত ফাহিমা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেধা তালিকায় স্থান পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারিনি। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি হতে পারব সে জন্য চেষ্টা করেছি। চবিতে ভর্তির আশায় এতদিন কোথাও ভর্তি হইনি। যারাই আমার জন্য সহায়তা করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিশেষ করে রাকিব উদ্দিন ভাই আমাদের রায়ের কপি আনতে অনেক পরিশ্রম করেছেন। দীর্ঘদিন পর হলেও ভর্তি হতে পারব, অবশ্যই ভালো লাগছে। 

জিনাতুল ফেরদৌস বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে চবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিই। কিন্তু ভর্তি হতে না পেরে খুব খারাপ লাগছিল। আব্বু-আম্মু অনেক কষ্ট করেছেন। অবশেষে আজ ভর্তির অনুমতি পেলাম। অনেক আনন্দ লাগছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে আমরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তির অনুমোদন দিয়েছি। তাদের ভর্তি হতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।

রুমান/আরআই