ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি অনুষদের দুটি চেকবই চুরি এবং ডিনের সই জালিয়াতি করে ১০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। তবে কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছেন।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ।

তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তবে কারো বিরুদ্ধে  উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ পাইনি। এজন্য আরেকটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা ডিনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সুপারিশ করেছি। একইসঙ্গে চেক চুরি, সই জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাৎ এই তিনটির উপযুক্ত ধারায় মামলার সুপারিশ করেছি।

এ বিষয়ে ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। কমিটি বলেছে, এটির অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। আমরা এটি উপাচার্য স্যারের কাছে জমা দিয়েছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্দেশ দিলে আমরা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো।’

অনুষদ সূত্রে জানা যায়, ফার্মেসি অনুষদের সদ্য সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. এস এম আবদুর রহমানের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অনুষদের ডেভেলপমেন্ট ফান্ড থেকে ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং ফার্মেসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার A/C 0200009379565 এবং A/C 0200000947674 একাউন্ট থেকে আনুমানিক ২০টি চেকের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় এই টাকাগুলো উত্তোলন করা হয়েছে।

সাধারণত ছয় মাস কিংবা এক বছর পর পর অডিট করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই অনুষদে প্রায় দুই বছরেও তা না হওয়ায় ডিনের গাফিলতি দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য কেউ কেউ তৎকালীন ডিনকেই দুষছেন। একইসঙ্গে হিসাব রক্ষককেও সন্দেহ করা হচ্ছে।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ঘটনার সময় ডিনের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. এস এম আবদুর রহমান। তিনি বলেন, অ্যাকাউন্টস ম্যানেজারের মাধ্যমে চেকবই চুরির বিষয়টি জেনেই আমি উপাচার্যকে জানিয়েছি। একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছি। আমি নিজেই যেখানে অভিযোগ করেছি, উপাচার্যের পরামর্শে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, সেখানে আমাকেই অভিযুক্ত করা খুবই দুঃখজনক। এগুলো ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই না।

তবে ডিন ও হিসাব রক্ষকের অদক্ষতা ও অবহেলা আছে স্বীকার করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ।

এইচআর/এমএইচএস