খুলনার ডুমু‌রিয়ায় সাবেক স্ত্রী হত্যার দায়ে লিটন মোল্লা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ম‌শিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা ক‌রেন।

আদাল‌তের এ‌পি‌পি এম ই‌লিয়াস খান ও শা‌ম্মি আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণার সময় আসা‌মি আদাল‌তে উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

আদালতের সূত্র জানায়, নিহত পারভীন বেগম লিটন মোল্লার দ্বিতীয় স্ত্রী। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পূ‌র্বে তা‌দের বিয়ে হয়। বি‌য়ের সময় পারভীন আ‌গের ঘ‌রে আট বছরের এক‌টি কন্যা সন্তান নিয়ে ওই ঘ‌রে ও‌ঠে। বি‌য়ের পর কিছু‌দিন ভালোভাবে চললেও প‌রে তাদের মধ্যে মত‌বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে প্রায়ই উভয়ের মধ্যে হাতাহা‌তির ঘটনা ঘটে। স্থানীয়ভাবে মিমাংশা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় লিটন মোল্লা।

হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ আ‌গে পারভীন স্বামীকে তালাক দেন। এ নি‌য়ে ক্ষুব্ধ হয় লিটন। হত্যার প‌রিকল্পনা করতে থাকেন তিনি। ২০২১ সালের ১৫ জুন রাতে পারভীনকে হত্যার জন্য বা‌ড়ি থেকে শাবল ও ধারাল ছু‌রি নেন লিটন।

রাত ১টার দিকে ডুমু‌রিয়া ম‌হিলা কলেজের পাশ জ‌নৈক শামসুর রহমানের ভাড়া বা‌ড়িতে এ‌সে পারভীনকে ডাকতে থাকে। সাড়া দিয়েও তিনি আবার ঘু‌মি‌য়ে পড়েন। এক পর্যায়ে শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ফেলে লিটন। তাকে অস্বাভা‌বিক দেখতে পে‌য়ে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন পারভীন। হাতের নাগালে পেয়ে ধারাল ছু‌রি দিয়ে শরীরের বি‌ভিন্ন স্থানে কোপাতে থাকে লিটন। এরপর মৃত্যু নি‌শ্চিত করার জন্য পাশের রান্না ঘর থেকে কাঠ এনে মাথায় আঘাত করতে থা‌কেন লিটন।

বাইরে চিৎকার শুনে নিহতের আট বছর বয়সী কন্যার ঘুম ভেঙে যায়। তার চিৎকার শুনে অন্যান্যরা এ‌গিয়ে এসে পারভীনকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চি‌কিৎসার জন্য হাসপতালে প্রেরণ করলে কর্তব্যরত চি‌কিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বড় মেয়ে লিটনকে আসা‌মি করে হত্যা মামলা দায়ের করে।

একই বছরের ৩০ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লিটনকে অ‌ভিযুক্ত ক‌রে আদালতে অ‌ভিযোগপত্র দা‌খিল করেন। ১৮ জন আদলতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাত কার্যদিবসে মামলা‌টির বিচার কার্যক্রম শেষ হয়েছে বলে আদালতের ওই সূত্র জানায়।

মোহাম্মদ মিলন/আরআই