দণ্ডপ্রাপ্ত আজম মাহমুদ

যৌতুকের মামলায় মায়ের সাক্ষীতে আজম মাহমুদ নামে এক পুলিশ কর্মকর্তার তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক নিলুফার শিরিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। 

রায় ঘোষণা শেষে আজম মাহমুদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। আদালতের পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত আজম মাহমুদ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের বজলুর রশিদের ছেলে। এই মামলার কারণে বরখাস্ত হয়ে সর্বশেষ কুষ্টিয়ার পুলিশ লাইনে সংযুক্ত ছিলেন তিনি।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার একরাম আলীর মেয়ে রাবেয়া আক্তারকে বিয়ে করেন আজম মাহমুদ। 

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করেন আজম। পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য দেড় লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নেন। পরবর্তীতে এসআই পদে পদোন্নতির জন্য ফের স্ত্রীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক নেন।

এরপরও স্ত্রীর ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। আজম চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকলেও স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে যেতেন না। সর্বশেষ ২০১৮ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানায় চাকরিকালে জান্নাতুল নামে এক নারীকে বিয়ে করেন আজম।

এ বিষয়ে আপত্তি তোলায় ফের নির্যাতন শুরু হয় রাবেয়ার ওপর। ২০১৯ সালের ২৭ জুন দ্বিতীয় স্ত্রীর বিষয় নিয়ে আপত্তি করায় রাবেয়াকে বেধড়ক মারপিট করেন আজম।

ওই সময় সাফ জানিয়ে জানিয়ে দেন পাঁচ লাখ টাকা না দিলে রাবেয়াকে নিয়ে সংসার করবেন না।এমনকি রাবেয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ কারণে স্বামী ও শ্বশুরসহ ছয়জনকে আসামি করে ২০১৯ সালের ১১ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের মামলা করেন রাবেয়া।

পরবর্তীতে আজম মাহমুদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজম মাহমুদকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন বিচারক।

জাহিদ হাসান/এএম