রাজশাহীর গোদাগাড়ীর গভীর নলকূপ অপারেটর শাখাওয়াত হোসেনকে সরিয়ে দিল বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। রোববার (৩ এপ্রিল) তাকে সরানো হয়।

শাখাওয়াত হোসেন উপজেলার ঈশ্বরীপুর এলাকার মৃত হারুন–অর-রশিদের ছেলে। ওয়ার্ড কৃষক লীগ সভাপতি শাখাওয়াত ঈশ্বরীপুর-২ গভীর নলকূপের অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, বিএমডিএর শর্ত সাপেক্ষে শাখাওয়াত হোসেনের নিয়োগ কার্যকর ছিল। কিন্তু অভিযোগ ওঠায় তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিএমডিএর অপারেটর নিয়োগ মূলত, চুক্তিভিত্তিক। প্রতি ঘণ্টায় ১০ টাকা হারে মজুরি মজুরি দেয়া হয় অপারেটরদের। চুক্তির শর্ত ভঙ্গ হওয়ায় তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। 

গত ২৩ মার্চ বিষপান করেন জেলার গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের নবাই বটতলা নিমঘুটু গ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও তার চাচাতো ভাই রবি মার্ডি। বাড়ি ফিরে ওইদিন রাতেই মারা যান অভিনাথ। স্বজনরা ওই রাতেই রবি মার্ডিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ মার্চ রাতে মারা যান রবিও।

এ ঘটনায় গত ২৫ মার্চ রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে অভিনাথ মার্ডির স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। 

রবি মার্ডির মৃত্যুর পর আত্মহত্যার প্ররোচনায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন তার ভাই সুশীল মার্ডি। দুটি মামলাতেই একমাত্র আসামি করা হয় গভীর নলকূপ অপারেটর শাখাওয়াত হোসেনকে।

১১ দিন পলাতক থাকার পর শনিবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার চব্বিশ নগর কদম শহর এলাকায় গ্রেফতার হন শাখাওয়াত হোসেন। তিনদিনের রিমাণ্ড চেয়ে রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুরের পর তাকে আদালতে তোলা হয়। 

এদিকে, মৃত অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রমের দাবি, গভীর নলকূপের অপারেটর পানি না দেয়ায় তার স্বামী বিষপান করেন। আর রবি মার্ডির মা জানিয়েছেন, পানি সেচ দেয়া নিয়ে কোনো সমস্যার কথা তার জানা নেই।

তবে ওই গভীর নলকূপের অধীনে বোরো চাষ করা অন্য কৃষকরা বলছেন, পানির সংকট ছিল না। আর গভীর নলকূপের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিএমডিএ জানিয়েছে, পানি সেচের জন্য নিজস্ব প্রি-পেইড কার্ডই ছিল না আত্মহননকারী দুই কৃষকের। 

পুলিশ বলছে, ভিসেরা প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত রহস্যজট খুলছে না। যদিও আলাদা তদন্ত কমিটি করে ঘটনা খতিয়ে দেখছে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বিএমডিএ।

 ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস