৩ শিশুকে নিয়ে বিপাকে সমাজসেবা অধিদপ্তর
বাগেরহাটে কুড়িয়ে পাওয়া শিশু মীমের অভিভাবকদের খোঁজ মেলেনি ছয় মাসেও। বৈধ অভিভাবকের অপেক্ষায় বাগেরহাট সরকারি শিশু পরিবারে দিন কাটছে শিশু মীমের। সমাজসেবা অধিদপ্তরের অনেক চেষ্টায়ও মীমের অভিভাবকদের খোঁজ মিলছে না। মীমকে নিয়ে কী করবে, এই নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানটিও রয়েছে বিপাকে।
শুধু মীম নয়, বাগেরহাট সদর উপজেলার পাটরপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়ায় নবজাতক ইমারও কোনো অভিভাবক পায়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর। অভিভাবক পাওয়া যায়নি বাগেরহাট শহরের দক্ষিণ হাড়িখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে উদ্ধার হওয়া বাকপ্রতিবন্ধী ছেলে শিশুর। দুজনই এখন সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে খুলনা ছোটমণি নিবাসে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তবে সমাজসেবা অধিদপ্তর বলছে, কোনো নিঃসন্তান সক্ষম ও সচ্ছল দম্পতি স্বেচ্ছায় এই শিশুদের নিতে চাইলে আইনি প্রক্রিয়া মেনে দত্তক প্রদান করা হবে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে বাগেরহাট শহরের মুক্তি ক্লিনিকের সামনে সাত বছর বয়সী মীম নামের একটি শিশুকে উদ্ধার করে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ। পরের দিন ১৪ অক্টোবর মীমকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশু পরিবারে হস্তান্তর করে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ। পরে অধিদপ্তর ও পুলিশ অনেক চেষ্টা করেও মীমের অভিভাবককে খুঁজে পায়নি। বাড়ি জানতে চাইলে মীম জানায় তার বাড়ি সিলেট। মীমের গায়ের রং হালকা ফরসা এবং স্বাস্থ্য ভালো। তবে মা-বাবার সম্পর্কে সে কিছুই বলতে পারে না।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ২০ মার্চ দুপুরে বাগেরহাট শহরের দক্ষিণ হাড়িখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তিন বছর বয়সী বাকপ্রতিবন্ধী একটি ছেলে শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকেও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই দিন বোরকা পরা এক নারী শিশুটিকে স্কুলের সামনে রেখে চলে যান। প্রায় এক মাস হলে শিশুটির অভিভাবক হিসেবে কেউ আসেনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে। আদৌ কেউ আসবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় অধিদপ্তর।
গত ২ এপ্রিল বাগেরহাট সদর উপজেলার পাটরপাড়া এলাকার আজমুল কবির ইমামুল দম্পতির কাছে পানি খাওয়ার কথা বলে এক নবজাতককে রেখে যায়। পরে আজমুল কবির এক দিন বয়সী ওই মেয়ে নবজাতকের নাম রাখেন ইমা। ৩ এপ্রিল আজমুল নবজাতককে সদর থানায় হস্তান্তর করেন। পরে তাকে গ্রহণ করে খুলনার ছোটমণি নিবাসে পাঠায় সমাজসেবা অধিদপ্তর। ১৫ দিনেও নবজাতককের দাবি নিয়ে কেউ আসেননি সমাজসেবা অফিসে। কোনো নিঃসন্তান দম্পতিও আবেদন করেননি ইমার দায়িত্ব নিতে।
বাগেরহাট সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ বলেন, নবজাতক ইমা আমাদের তত্ত্বাবধানে সরকারি শিশু পরিবারে রয়েছে। মীম ও বাকপ্রতিবন্ধী শিশুটিও ছোটমণি নিবাসে রয়েছে। যদি কোনো নিঃসন্তান দম্পতি এই শিশুদের নিতে চায়, তাহলে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আমরা তাদের এই শিশুদের লালন-পালন করতে দেব। সক্ষম নিঃসন্তান দম্পতিদের এই শিশুদের দায়িত্ব নিতে আবেদন করার আহ্বান জানান এই সমাজসেবা কর্মকর্তা।
তানজীম আহমেদ/এনএ