আছিয়া খাতুনের বয়স ১০০ ছুঁইছুঁই। একা চলাফেরা করতে পারেন না। তাই মুন্সীগঞ্জ আদালতে নাতনির হাত ধরে এসেছেন ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে। 

আছিয়া খাতুনের স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১২ বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলে মুক্তার খান কোনো খোজঁ খবর নেন না তার। দেন না কোনো ভরণপোষণও। আছিয়া খাতুন স্বামীগৃহে থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন মেয়েদের দেওয়া টাকায়। কিন্তু সেই মেয়েদের দেওয়া টাকাও আত্মসাৎ করেছে ছেলে মোক্তার খান এবং পুত্রবধূ।

এছাড়াও গত ২০ এপ্রিল রাতে ওই বৃদ্ধার আলমারিতে থাকা স্বর্ণের কানের দুল ও চেইন চুরি করে নিয়ে গেছে। পরে তিনি জিজ্ঞাসা করলে তাকে চর থাপ্পড় মেরে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি ঘরের বাইরে এলেই তাকে গালিগালাজ করছে তার ছেলে ও পুত্রবধূ। 

পরে বাধ্য হয়ে তিনি গতকাল শনিবার টঙ্গিবাড়ী থানায় গিয়েছিলেন মামলা করতে। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় রেখেও নেয়নি কোনো অভিযোগ। তাই রোববার আদালতে এসেছেন মামলা দায়ের করতে। 

দুপুরে মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-৪ এ ছেলে মুক্তার খান ও পুত্রবধূ মারিয়া ইসলাম মিতা নামে টাকা আত্মসাৎ ও ঘর থেকে স্বর্ণের চেইন এবং কানের দুল চুরির অভিযোগে দায়ের করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ -আল-ইউসুফ মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের প্রতি সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।

আদালত চত্ত্বরে আছিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী প্রায় ১২ বছর আগে মারা গেছে। ছেলে মুক্তার খান এবং ছেলের বউ ভরণপোষণ সেবা যত্ন করে না। আমার দুই মেয়ে জেরিন খান ও জেনিফার আমার নামে অগ্রণী ব্যাংকে হিসাব নম্বর খুলে দিয়েছে। ওই হিসাবে তারা প্রতিমাসে টাকা পাঠায়। কিন্তু আমার ছেলে কৌশলে আমাকে দিয়ে চেকে সই করিয়ে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেছে। পরে আমি আমার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমার নাতনি সেবা আক্তারকে আমার কাছে রেখেছি। কিন্তু ওরা আমার নাতনি নামে বিভিন্ন বদনাম রটাচ্ছে।

তিনি বলেন, শনিবার সকালে মামলা করতে টঙ্গিবাড়ী থানায় গিয়েছিলাম। তারা আমাকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিল। কিন্তু আমার মামলা নেয়নি। এজন্য আদালতে এসেছি মামলা করতে।

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা সোয়েব আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার সঙ্গে ওই বৃদ্ধার সাক্ষাৎ হয়নি। বিষয়টা জানি না।

শামীম/এমএএস