গোলাম ফারুক

প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আইনি জটিলতায় একবারও নির্বাচন হয়নি হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ পৌরসভায়। ১৬ বছর ধরে প্রশাসকের পদে রয়েছেন বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক। যথাসময়ে নির্বাচন না হওয়ায় পৌরসভায় কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নও হয়নি। অবশেষে পৌর প্রশাসক পদ থেকে গোলাম ফারুককে অব্যাহিত দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

পাশাপাশি পৌর প্রশাসক হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে পৌরসভার সার্বিক বিষয় তদারকির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও দায়িত্ব হস্তান্তরে গড়িমসি করছেন গোলাম ফারুক। পদ আখড়ে রাখতে আদালতে রিটও করেছেন তিনি।

গত ২১ ডিসেম্বর প্রশাসকের পদ থেকে গোলাম ফারুককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি বিষয়টি জানা যায়। সর্বশেষ রোববার (১০ জানুয়ারি) চিঠি দিয়ে তাকে দায়িত্ব হন্তান্তর করতে বলা হয়।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মতিউর রহমান খান বলেন, চিঠি ইস্যু হয়েছে গত ২৪ ডিসেম্বর। কিন্তু আমরা চিঠি হাতে পেয়েছি ৪ জানুয়ারি। চিঠি পাওয়ার পর প্রশাসক মো. গোলাম ফারুককে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য একাধিকবার মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। কিন্তু তাতে তিনি সাড়া না দেওয়ায় রোববার চিঠির মাধ্যমে দায়িত্ব হস্থান্তর করতে বলা হয়। এরপরও যদি দায়িত্ব হস্থান্তর না করেন, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পৌর প্রশাসক গোলাম ফারুক বলেন, আমি চিঠি হাতে পেয়েছি। তবে আমাকে যে ধারায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সেটি বেআইনি। যে কারণে আমি আদালতে একটি রিট করেছি। রিটের শুনানি হবে। শুনানি না হওয়া পর্যন্ত আমি দায়িত্ব হস্তান্তর করব না।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারজানা মান্না স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয় মো. গোলাম ফারুককে আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসকের দায়িত্ব পালনসহ পৌরসভার সার্বিক বিষয় তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ জানুয়ারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদরকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তখন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। একই বছরের ডিসেম্বরে প্রশাসক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক। 

এরপর শুরু হয় ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ কার্যক্রম। তবে উপজেলা সদরের নোয়াগাঁও, ফতেহপুর ও শুক্রবাড়ি গ্রাম পৌরসভা থেকে বাদ পড়ে। গ্রাম তিনটি পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে উচ্চ আদালতে রিট করেন তৌহিদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন আদালত। এরপর কেটে যায় ১৬ বছর।

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন/এএম