মাদারীপুরে চোখের পলকে চুরি হয়ে যায় পালসার-প্লাটিনা-অ্যাপাচি
মাদারীপুর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে একের পর এক মোটরসাইকেল চুরি
মাদারীপুর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে একের পর এক মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে চোর চক্র। এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হলেও কমছে না মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা। ফলে আতঙ্কে মোটরসাইকেল মালিকেরা।
মাদারীপুর সদরের শকুনি লেক ব্যস্তময় এলাকা। ভ্রমণপিপাসু মানুষ প্রিয়জনদের নিয়ে মোটরসাইকেলে এখানে ঘুরতে আসেন। মোটরসাইকেল পার্কিংয়ে রেখে কিছুদূর গিয়ে পেছনে ফিরে দেখেন উধাও। অনেক সময় চোখের পলকে গায়েব হয়ে যায় মোটরসাইকেল। প্রতিদিনই ঘটে এমন ঘটনা। সংঘবদ্ধ চোর চক্র দিনে-রাতে শত শত লোকের মাঝ থেকে সুকৌশলে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে নামিদামি মোটরসাইকেল।
বিজ্ঞাপন
শকুনি লেক ছাড়াও শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। তবে চোর চক্রের টার্গেট দামি মোটরসাইকেল। পালসার, হিরো প্যাশন, প্লাটিনা ও অ্যাপাচি মোটরসাইকেলগুলো চোখের পলকে চুরি হয়ে যায়। পুলিশের চোখ এড়িয়ে দিনদুপুরে এভাবে একের পর এক মোটরসাইকেল চুরি হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন মালিকেরা।
১ জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেড় মাসে চুরি হয়েছে ২৫ মোটরসাইকেল। চুরি হওয়ার পরপরই খবর পেয়ে অভিযানে নেমেও মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে পাঁচটি। কোনোভাবেই চোর চক্র শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে চুরি ঠেকাতে বিশেষ কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেড় মাসে শহর, শহরতলী ও উপজেলা থেকে ২৫টি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। দিনদুপুরে মাদারীপুর সদরের শামসুন্নাহার স্কুলের সামনে থেকে রাসেল তালুকদারের পালসার মোটরসাইকেল চুরি হয়। শকুনি লেকের ওয়াজ টাওয়ার থেকে রেজাউল করিমের মোটরসাইকেল চুরি হয়। শকুনি লেকের শহীদ মিনারের সামনে থেকে ইয়াসিন আলীর মোটরসাইকেল চুরি হয়।
মোটরসাইকেল রেখে আশপাশেই আড্ডা দিচ্ছিলেন রাসেল তালুকদার, রেজাউল করিম ও ইয়াসিন। পাঁচ মিনিট পর এসে দেখেন মোটরসাইকেল নেই।
তারা জানিয়েছেন, মোটরসাইকেল চোর চক্রটি সংঘবদ্ধ। মোটরসাইকেল চুরির পর নম্বর বদলে বিক্রি করে দেয় চোরেরা। এক এলাকার চোরেরা অন্য এলাকার চোরদের কাছে এসব মোটরসাইকেল বিক্রি করে দেয়।
মাদারীপুর সদরের ট্রাফিক পরিদর্শক শাহআলম বলেন, কোনো মোটরসাইকেল চুরির তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক স্টেশনে জানাই, যাতে চোরদের ধরা যায়। এর বাইরে আমাদের কিছু করার থাকে না।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, মোটরসাইকেল চোর চক্রটিকে ধরার চেষ্টা করছি আমরা। চক্রটি খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে ধরে ফেলব। তদন্ত করে দেখেছি, আমরা তাদের খুবই কাছাকাছি। যেকোনো সময় তাদের ধরে ফেলব।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, পুরো জেলায় পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মোটরসাইকেল চোর চক্রটির সদস্যদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। পাশাপাশি মোটরসাইকেল মালিকদেরও সচেতন থাকতে হবে।
নাজমুল মোড়ল/এএম