পুলিশের লাঠিচার্জে সাংবাদিক আহত, বিচারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ
বরগুনায় কোন অপরাধ ছাড়াই ট্রাফিক পুলিশের লাঠিচার্জে এক সাংবাদিক আহত হয়েছেন৷ এছাড়াও ওই সংবাদকর্মীকে লাঞ্ছিত করেছেন ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্য। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যের বিচারের দাবিতে রাস্তায় অবস্থান নেন আহত ওই সাংবাদিক। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় তার সহকর্মীরা।
শুক্রবার (৩ জুন) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে পৌরশহরের ফলপট্টির সামনে সদর সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদকর্মীর নাম ফখরুল ইসলাম রনি (৩৩)। তিনি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সংবাদদাতা ও চ্যানেল নাইনের সাবেক জেলা প্রতিনিধি। এছাড়াও কমিউনিটি রেডিও লোকবেতারের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবেও কর্মরত আছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী রনি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় একটি ইজিবাইকে চড়ে ফলপট্টি এলাকায় আসেন তিনি৷ এসময় তাকে বহন করা ইজিবাইকটি রাস্তায় পার্কিং করা ছিল। হঠাৎ ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য সেখানে এসে পার্কিং করা রিকশার উপর লাঠিচার্জ করতে থাকেন। এর এক পর্যায়ে রনির ঘাড়ে লাঠির আঘাত লাগে। পরে ইজিবাইকটি ট্রাফিক পুলিশের ধাওয়া খেয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার সময় রনির ডান পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। এতে গুরুতর আহত হয় রনি।
বিজ্ঞাপন
পরে এমনটা করার কারণ জানতে চাইলে ফখরুল ইসলাম রনিকে গালিগালাজ করেন ওই ট্রাফিক পুলিশের সদস্য। এরপর এ ঘটনার বিচারের দাবিতে রাস্তায় অবস্থান নেন রনি। ঘণ্টাখানেক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মদ। পরে সহকর্মীরা এসে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় রনিকে।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য ও বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি সহিদুল ইসলাম স্বপ্ন বলেন, আমাদের সহকর্মী রনিকে লাঠিপেটা করেছে এক পুলিশ। শুধু রনি নয়, পুলিশের হাতে বহু সংবাদকর্মী লাঞ্ছিত হচ্ছেন। যেখানে একজন সংবাদকর্মী নিরাপদ নয়, সেখানে সাধারণ মানুষের কথা না-ই বললাম। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
স্থানীয় দৈনিক স্বাধীন বানী পত্রিকার বার্তা সম্পাদক সানাউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ট্রাফিক পুলিশের লাঞ্ছনার শিকার আমিও হয়েছি। আইনশৃঙ্খলা সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাত দশটার আগে পৌরশহরের মধ্যে মালবাহী গাড়ি পণ্য লোড-আনলোড করতে পারবে না। তবুও সকাল থেকেই শহরে বড় বড় মাল বোঝই গাড়ি ঢুকে যানজটের সৃষ্টি করে। যা ট্রাফিক পুলিশের নাকের ডগায়ই হচ্ছে। টমটম, ট্রাক্টরসহ অবৈধ যানবাহন অনবরত শহরের মধ্যে প্রবেশ করেই যাচ্ছে। বিষয়টি আমি ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা এটিএসআই জিলানি সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে বলেন পুলিশকে চার্জ করার আপনি কে? আমি পরিচয় দিলে তিনি বলেন আমার মত ৫-৬ সাংবাদিক নাকি তারও আছে। এসময় তিনি আরও খারাপ ব্যবহার করেন। এই যদি হয় পুলিশের আচরণ তাহলে সাধারণ মানুষরা কোথায় নিরাপদ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেহেদী হাছান বলেন, খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়েছি। রনির পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, এক্স-রে রিপোর্ট আসার পর বোঝা যাবে কি হয়েছে। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্যকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্ব না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
খান নাঈম/আইএসএইচ