কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌর শহরে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত ৬ জুন দুপুরের দিকে শহরের বড় জামে মসজিদের কাছে কুমারখালী স্টিল ফার্নিচার ও সিমেন্ট নামে একটি দোকানের গুদামে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কুমারখালী থানায় লিখিত এজাহার জমা দিলেও পুলিশ তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি বলে অভিযোগ দোকানমালিক আরিফুল ইসলামের।

ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় ধারণ করা ওই হামলার দৃশ্যের ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

হামলার বর্ণনা দিয়ে আরিফুল বলেন, ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিমেন্ট কোম্পানিকে পাঠানোর জন্য ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা নিয়ে আমি দোকান থেকে বের হচ্ছিলাম। তখন হঠাৎ পাপ্পু, সৌরভ, আলামিন ও ইনসানসহ আরও চার-পাঁচ যুবক হকিস্টিক, বেকি (ধারালো অস্ত্র), হাঁসুয়া, রামদা ও লোহার রড উঁচিয়ে আমার ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এ সময় আমার সঙ্গে থাকা মামাতো ভাই আশিক ঠেকাতে গেলে ওরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম ও আহত করে। হামলাকারীরা আমার কাছে থাকা ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আমার দোকান ভাঙচুর ও তছনছ করে।

তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় জানিয়ে ব্যবসায়ী আরিফুল বলেন, এলাকাবাসী গুরুতর আহত ছোট ভাই আশিকসহ আমাকে উদ্ধার করে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেয়। প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে চলা হামলায় যা কিছু ঘটেছে, তার সবই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সংরক্ষিত আছে।

আরিফুল আরও বলেন, আমি থানায় এজাহার জমা দিলে বিষয়টি জানতে পেরে কুমারখালী পৌর মেয়র সামছুজ্জামান অরুণ পুলিশকে মামলা নিতে নিষেধ করেন। সে কারণে পুলিশ আমার মামলাটি রেকর্ড করেনি। এমনকি আমার ছিনতাই হওয়া ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা উদ্ধারেও পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, গত সোমবার দুপুরে মসজিদ গলিতে হামলার ঘটনাটি ওদের নিজেদের মধ্যে সাজানো ঘটনা। আবার পরে তারা নিজেরাই সব ঠিক করে নিয়েছে। কোনো পক্ষই অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে ঘটনায় যারাই জড়িত থাক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কুমারখালীর পৌর মেয়র সামছুজ্জামান অরুণের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে পরিচয় জানিয়ে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

রাজু আহমেদ/এনএ