পারিবারিক কলহের জের ধরে কুষ্টিয়ায় রত্না খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। বুধবার (১৫ জুন) সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া শহরের আফু চেয়ারম্যানের গলি এলাকার ২০ নম্বর হোল্ডিং ভবনের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। 

রত্না খাতুন মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের চারমাইল গ্রামের আজিম মৃধার মেয়ে। এ ঘটনায় রত্নার স্বামী রনি হোসেন (৪০) ও শাশুড়ি লিলি খাতুনকে আটক করেছে পুলিশ। রনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের বটতৈল গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে। 

রনি প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তর জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে রনির সঙ্গে বিয়ে হয় রত্নার। তাদের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রনি ও তার মা শ্বাসরোধ করে রত্না খাতুনকে হত্যা করে।

নিহতের বাবা আজিম মৃধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে রত্নাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে রনি ও তার মা। বিকেলে মোবাইল করে কৌশলে রত্নাকে তার স্বামীর বাড়ি বটতৈল থেকে কুষ্টিয়া শহরে ডেকে আনেন শাশুড়ি। শাশুড়ি ছাত্রাবাস ও বাসা বাড়িতে বুয়ার কাজ করেন ও কুষ্টিয়া শহরের আফু চেয়ারম্যানের গলিতে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ভাড়ায় থাকে। ওই ভাড়া বাসায় রত্না আসলে তার স্বামী ও শাশুড়ি শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। 

নিহতের স্বজনরা জানায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যেই বাকবিতণ্ডা হতো, রত্নাকে মারপিট করত তার স্বামী। রত্না ভালো মানুষ ছিল। সে নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করে ভালোভাবেই সংসার করছিল। কিন্তু রত্নাকে বাঁচতে দিল না ওরা। শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। 

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই নারীকে শ্বাসরোধ হত্যার অপরাধে তার স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। নিহতের স্বামী হত্যা কথা স্বীকার করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। 

রাজু আহমেদ/এসপি