মেহেরপুরে প্রতিবেশীর দেওয়া কাঁটাতারে বন্দী ৫০ পরিবার
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ায় আটকে পড়েছে অর্ধশত পরিবার। শত বছরের চলাচলের রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়ায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েকশ মানুষ। সরকারি খরচে ইটের তৈরি রাস্তায় বেড়া দেওয়ায় গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কাঁটাতারের ওপারের বাসিন্দা। স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও পড়েছে বিপাকে।
রোববার (১৯ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চেংগাড়া বাজারের পশ্চিম পাশে রাস্তার কোল ঘেঁষে দেওয়া আছে কাঁটাতারের বেড়া। বেড়াটি এমনভাবে দেওয়া আছে যেখান দিয়ে কারও বের হওয়া দুষ্কর। বেড়ার ওপারে বাস করছেন অন্তত ৫০টি পরিবার। যাদের অধিকাংশই কৃষি কাজে ও ব্যবসায় জড়িত।
বিজ্ঞাপন
আলাপকালে ভুক্তভোগীরা জানান তাদের দুর্ভোগের কথা। কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে পড়া শহিদুল ইসলাম জানান, জন্মের পর থেকে তিনি দেখেছেন তার পূর্ব পুরুষরা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতেন। জমির ফসল আনা-নেওয়া ছাড়াও ব্যবসা বাণিজ্য সবই করা হতো ওই রাস্তা দিয়ে। বামন্দী গ্রামের হাফিজুল ক্রয়সূত্রে জমির মালিক দাবি করে রাস্তাসহ কাঁটাতারের বেড়া দেন। ফলে ওখানকার ৫০ পরিবারের যাতায়াতসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস জানান, জমিতে বেড়া দেওয়ার সময় হাফিজুলকে অনেক অনুরোধ করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য পথ চাওয়া হয়, কিন্তু তিনি শোনেননি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাঁটাতারের বেড়া দেন। এতে লোকজন বাড়ির পোশা গবাদি পশুও আনা-নেওয়া করতে পারছেন না। আবার ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজেও যেতে পারছে না। এক রকম অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি ও প্রতিবেশীরা।
শহিদুলের স্ত্রী আলেয়া খাতুন জানান, বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য এক ফুট জায়গাও রাখেনি হাফিজুল। অন্যের বাড়ির ওপর দিয়েও কোথাও যাবার জায়গা নেই। অবরুদ্ধ পরিবারের লোকজন স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশার শরণাপন্ন হলে তিনি আসেন ও সমাধানের চেষ্টা করেন।
সর্বশেষ কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন তা জানানো হয়নি। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মলিদা খাতুন জানায়, আমরা স্কুলে যাওয়ার সময় জামার সাথে বেড়া বেঁধে জামা ছিড়ে যায়। আমরা খেলা-ধুলা করতে যেতে পারছি না।
কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হাফিজুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশা জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি অবগত হয়েছেন। ইতোমধ্যে জমির মালিকের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।
আকতারুজ্জামান/আরআই