পৌনে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পেল ইউক্রেনে নিহত হাদিসুরের পরিবার
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত প্রকৌশলী হাদিসুরের পরিবার প্রায় ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। একইসঙ্গে হাদিসুরের মেজ ভাই তরিকুল ইসলামকে সরকারি চাকরি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত প্রকৌশলী বরগুনা বেতাগীর কদমতলা গ্রামের হাদিসুর রহমানের পরিবার গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন থেকে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার চেক পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকা থেকে চেকটি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন নিহত হাদিসুরের মেজ ভাই তরিকুল ইসলাম। অসহায় এ পরিবারটি এ টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। যা বিশ্বের মেরিটাইন সেক্টরের নজিরবিহিন সহায়তা।
স্বজনরা বলছেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পথে বসেছিলেন তারা। এখন সব অভাব দূর হবে তাদের।
বিজ্ঞাপন
হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল বাড়ির মসজিদটি সংস্কার ও বড় করে নির্মাণ করা। এছাড়াও বাবা-মায়ের জন্য একটি পাকা-বাড়ি নির্মাণ করাও তার স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন পূরণে প্রথমেই মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেছি আমরা। এরপর তার কবর ও বাড়ির কাজ শুরু করব। বাড়ির কাজের জন্য নির্মাণ সামগ্রী কেনা হয়ে গেছে।
নিহত হাদিসুরের মেজ ভাই তারেক হোসাইন বলেন, ভাই মারা যাওয়ার পরে অসুস্থ বাবা ও মাকে নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আমাকে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনে একটা চাকরি দেওয়া হয়। খুলনায় আমার পোস্টিং।
নিহত হাদিসুরের বাবা আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, আমার বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর গোটা পরিবারের পথে বসার উপক্রম হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় আমরা পৌনে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছি। আমার বাবার ইচ্ছে ছিল একটা পাকা বাড়ি বানাবে ও মসজিদটা বড় করবে। এখন আমরা হাদিসুরের সকল অপূরণীয় ইচ্ছা পূরণ করব। শিগগিরই ঘর ও তার কবর বাঁধাইয়ের কাজ শুরু করব।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতে গত ২ মার্চ রাতে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকেপড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলা চালায় রুশ সেনারা। এ হামলায় জাহাজের প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফ (৩৪) নিহত হন। পরদিন ৩ মার্চ সন্ধ্যায় অক্ষত ২৮ নাবিক এবং হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেনের একটি বাংকারে নেওয়া হয়। সেখানে হাদিসুরের মরদেহ রেখে বাকি নাবিকদের নিরাপদে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। গত ৯ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে তারা দেশে ফেরেন।
এরপর রকেট হামলায় নিহত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ ১৪ মার্চ রাতে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে। পরদিন ১৫ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে নিজ বাড়িতে মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
খান নাঈম/এমএএস