কুমিল্লায় স্কোপোলামিন ড্রাগ ব্যবহার করে রেখা সূত্রধর নামে এক নারীর মোবাইল, টাকা, গলার চেইন, আংটি, কানের দুল অনায়াসে ছিনতাই করেছে তিন সদস্যের ছিনতাইকারীর দল। স্কোপোলামিন দিয়ে ছিনতাই করা নতুন একটি কৌশল। 

ভুক্তভোগী রেখা সূত্রধর কুমিল্লা নগরীর গর্জনখোলা এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রেখা সূত্রধরের ছেলে কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. উত্তম সূত্রধর সোমবার (২৮ জুন) কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 

ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেন, গত রোববার (২৭ জুন) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় কাত্যায়নী কালীবাড়ী মন্দিরে পূজা-অর্চনা করতে যান রেখা সূত্রধর। পূজা শেষে বাসায় ফেরার পথে টাউন হলের অপরপাশে রসের হাড়ি মিষ্টির দোকানের সামনে থেকে লেবু কিনে অটোতে উঠার জন্য সামনে এগুতে থাকেন। ঠিক তখনই একজন যুবক পেছন থেকে ডেকে ঠিকানা জানতে চান। ঠিকানা চেনে না বলে সামনে এগুতে থাকলে আরেকজন পুরুষ প্রশ্ন করেন যুবকটি তার কাছে কি জানতে চেয়েছেন। এরই মধ্যে সাদা কাগজ বের করে ভুক্তভোগীর নাকের কাছ দিয়ে নেওয়ার পর থেকেই তিনি তাদের সঙ্গে চলতে থাকেন। এক পর্যায়ে কান্দিরপাড় কলেজ রোডে লোট্টোর ব্রান্ডশপের সিঁড়ির সামনে তিনজন যুবক ওই নারীর সঙ্গে বিভিন্ন কথা বলে। 

এক পর্যায়ে মোবাইল, গলার চেইন, কানের দুল, টাকা সব দিয়ে দিতে বললে তিনি অনায়াসে তাদের কথামতো সব দিয়ে দেন। বিষয়টি সাবলিল দেখাতে পথচারীরাও বুঝে উঠতে পারেননি। আধাঘণ্টা পর রেখা সূত্রধরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি তখন বুঝতে পারেন ছিনতাইকারী সব নিয়ে চলে গেছে। তখন তিনি চিৎকার করলে লোকজন তাকে বাসায় পৌঁছে দেন। বাসায় তিনি নিজ ছেলের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন। 

কুমিল্লা ডায়াবেটিক হাসপাতালের চিকিৎসক মাঈনুদ্দিন বলেন, এটা ছিনতাইয়ের নতুন কৌশল। স্কোপোলামিন ড্রাগ একবার নাকের মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশ করাতে পারলে ছিনতাইকারী যা বলবে ভুক্তভোগী তাদের কথামতো সব করবে। এমনটাই হয়েছে রেখা সূত্রধরের সঙ্গে। 

ভুক্তভোগী রেখা সূত্রধরের ছেলে ডা. উত্তম সূত্রধর ঢাকা পোস্টকে বলেন ছিনতাইকারীরা প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে গেছেন। আমার মা এখন বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ছিনতাইকারীরা স্কোপোলামিন ড্রাগ ব্যবহার করেছেন।   
 
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, জিডি করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

এমএএস