দুই স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় ক্ষোভে নিজের মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন গোলাম হোসেন (৩৫) নামে এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। এ সময় তিনি তার একটি দোকানঘরও ভাঙচুর করেন। 

মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গোলাম হোসেন নবীনপুর গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। 

নওপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বেশ কয়েকদিন গোলাম হোসেন বিমর্ষ অবস্থায় দোকানে আসেন। ঠিকঠাক মতো কারও সঙ্গে কথাও বলেন না। অনেকে বিষন্নতা নিয়ে প্রশ্ন করলে পারিবারিকভাবে অশান্তিতে আছেন বলে জানান। তবে তার দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী আল্পনা। তার তিন ছেলে। তাকে রেখে বছর দেড়েক আগে ভাটপাড়া আবাসনে সোনালী খাতুন নামে এক নারী বিয়ে করেন। সেখানেও তার একটি ছেলে রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সংসারে গেলে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝগড়া করে, আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে গেলে প্রথম স্ত্রী ঝগড়া করে। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি বইছে গোলাম হোসেনের।

নওপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী একলাচ হোসেন জানান, দুপুরে দোকানে আসেন গোলাম হোসেন। বিকেলে দোকান ঘর ভাঙার শব্দ শুনে গিয়ে দেখি রাস্তায় মোটরসাইকেল ভাঙচুর করছে। আমরা ঠেকাতে গেলে লাঠি নিয়ে আমাদের ধাওয়া করে। পরে নিজের ব্যবহৃত আরকে ১০০ সিসি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হোসেন বলেন, আমরা বাজারেই ছিলাম। হঠাৎ কালো ধুয়া দেখে রাস্তায় গিয়ে দেখি মোটরসাইকেল জ্বলছে। পরে স্থানীয়রা গোলাম হোসেনকে আটকে রাখেন। মোটরসাইকেলটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

গোলাম হোসেনের বড় ছেলে রাজন হোসেন বলে, কয়েকদিন যাবত আমার দুই মাকে নিয়ে আমার বাবা খুব অশান্তিতে আছেন। শুনেছি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে উন্মাদ হয়ে পড়েছেন। আমার মাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করায় আমার সৎ মা তাকে খুব কষ্ট দেয়। এই নিয়ে বাবার মন খারাপ। কারো সঙ্গে কথাও বলছেন না কয়েক দিন। যে মোটরসাইকেলটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, সেটি আমি ও আমার বাবা দুজনই ব্যবহার করতাম।

গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন বলেন, আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করেছে, তার একটিও রাখেনি গোলাম হোসেন। ফলে মাঝে মধ্যে ঝগড়া হয়। তবে নিজের মোটরসাইকেল কেন পুড়িয়েছে তা জানি না।

গোলাম হোসেন বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী আমার ওপর রাগ করে ১০টি ঘুমের ওষুধ সেবন করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজ সকালে তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। এ নিয়ে আমার মাথায় রাগ উঠে গিয়েছিল। তাই নিজের ক্ষতি করে অন্যদের শাসন করলাম।

বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভপতি আবুল বাসার জানান, সংসারে যা কিছুই হোক না কেন মোটরসাইকেল পোড়ানো এবং দোকানঘর ভাঙচুর করা ঠিক. হয়নি। এতে বাজারের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।

আকতারুজ্জামান/আরএআর