হাওর বাওরের জেলা সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফার বন্যায় সুনামগঞ্জের সরকারি-বেসরকারি ২৫ হাজার ১৮০টি পুকুরের সবগুলো তলিয়ে গেছে। পানির স্রোতে ভেসে গেছে সকল পুকুরের মাছ ও পোনা। ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিরা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফার বন্যার পানিতে জেলার সবগুলো পুকুর ভেসে গেছে। পুকুরে এখন পানি ছাড়া কিছুই নেই। সবকিছু হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে তাদের।  

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারি ও বেসরকারি সব পুকুর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার মাছচাষি। 

বন্যায় পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ৩০ হাজার মে. টন মাছ ও ১০ কোটি মাছের পোনা পানিতে ভেসে গেছে। পুকুরের পাড় ভেঙেও অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকার বেশি। সব মাছচাষিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

মাছচাষিরা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় সব মাছ ও পোণা পানিতে ভেসে গেছে। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। পথে বসার উপক্রম হয়েছে সবার। সরকারিভাবে সহায়তা না পেলে মাছ চাষ করা সম্ভব হবে না। 

পৌর শহরের হাছন নগর এলাকার মৎস্যচাষি ও রফিকুল ইসলাম কালা মিয়া বলেন, আমার বিশ লাখ টাকার মাছ শেষ। টাকার বদলে পানি পড়ে রইছে। বানের পানি ছাড়া আর কিছুই রইল না আমার। 

ওয়েজখালীর আব্দুল হেকিম বলেন, বন্যার প্রথম ধাক্কার ক্ষতি পুষিয়ে উঠার আগেই এতো বড় ধাক্কা সইবার মতো পরিস্থিতি আর নাই। ফার্মের দেড় কোটি টাকা সমপরিমাণের মাছ ভেসে গেছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখন সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আর ভবিষ্যৎ বলতে কিছু থাকবে না। 

সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ জেলায় ছোট-বড় প্রায় ১৭ হাজার মানুষ যুক্ত রয়েছেন মৎস ব্যবসার সঙ্গে। হাওর-বিল ও পুকুরে প্রতি বছর অন্তত এক লাখ ৫ হাজার মে. টন মাছ উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। 

তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সরকারি ১৮০ ও বেসরকারি ২৫ হাজার পুকুর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিদের পুনর্বাসনের জন্য প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন। প্রণোদনা পেলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

এমএএস