আজগর আলী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরকে দাফন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের (২৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার আজগর আলী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের নোয়াব আলী মাস্টারের ছেলে।

নোয়াখালীতে কর্তব্যরত সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজন তার জানাজায় অংশ নেন। একই সঙ্গে জানাজায় অংশ নিয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল। জানাজা শেষে বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর তাকে দাফন করা হয়।

দাফন শেষে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, মুজাক্কির আমার লোক। ওই দিন মুজাক্কির ও আমার ওপর হামলা চালান কাদের মির্জা এবং তার অনুসারীরা। ২০ জনের অধিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কাদের মির্জা দাঁড়িয়ে থেকে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে মুজাক্কিরকে খুন করিয়েছেন। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

মুজাক্কিরকে নিজের পক্ষের লোক দাবি করে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, মিজানুর রহমান বাদল ও তার অনুসারীদের গুলিতে আমার দলের সমর্থক মুজাক্কির নিহত হয়েছে। তার দাফন ও জানাজায় আমি অংশ নিতে পারিনি। কারণ ওই এলাকা বাদলের। আমি সেখানে গেলে ঝামেলা হবে বিধায় যাইনি। আমাকে শান্ত থাকতে বলেছেন জননেতা ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, আমাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমি ৪৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। আমার পাশে কেউ না থাকলেও একা লড়ে যাব। আমি সবসময় অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলব। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে কথা বলে যাব।

সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের জানাজায় হাজারো মানুষ/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। কারণ সেদিন দুই পক্ষের সংঘর্ষের ভিডিও তার মোবাইলে ছিল। যাতে সত্যটা কেউ জানতে না পারে সেজন্য মুজাক্কিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে উপজেলার ফকিরা বাজারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। সংঘর্ষে সাংবাদিক মুজাক্কির গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে বসুরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই সাংবাদিক মুজাক্কিরকে ঢাকায় পাঠানো হয়। শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হাসিব আল আমিন/এএম