রাজশাহীতে কিশোর সনি (১৭) হত্যা মামলায় আরও দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (৬ জুলাই) রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে আলাদা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

গ্রেপ্তার দুই যুবক হলেন নগরের হেতেমখাঁ এলাকার শফিকের ছেলে মো. শাহী (১৯) ও একই এলাকার মৃত সোহেলের ছেলে আব্দুর রহিম (১৯)। তাদের মধ্যে আব্দুর রহিম মামলার দুই নম্বর এবং শাহী ৪ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।

র‌্যাব জানিয়েছে, ঢাকার শ্যামলী এলাকা থেকে প্রথমে শাহীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুর রহিমকে।

এর আগে সোমবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে নগরের বালিয়াপুকুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় মামলার আরেক আসামি আনিন ইসলামকে (২০)।

পুলিশ জানায়, গত ৩ জুলাই সন্ধ্যায় রাত ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বন্ধুর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছিল সনি। ওই সময় তার সঙ্গে আরও তিন বন্ধু ছিল।

ফেরার পথে একদল যুবক কৌশলে তাদের হেতেমখাঁ সাহাজীপাড়া কফিল উদ্দিন জামে মসজিদের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই আরও ১৪-১৫ জন যুবক উপস্থিত ছিলেন। সনি সেখানে পৌঁছা মাত্রই দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।

তাকে গুরুত্বর জখম করে ফেলে যায় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন সনিকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

সনির বাবা রফিকুল ইসলাম পাখির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। এরপরই আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে পুলিশ।

এদিকে, শুরু থেকেই ঘটনার ছায়া তদন্ত করছিল র‌্যাব। র‍্যাবের ভাষ্য, মামলার এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মঈন ওরফে আন্নাফ (২০) মূলত মঈন গ্রুপের প্রধান। এই গ্রুপ নগরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালায়। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল মো. সনি (১৭)।

আর এ কারণেই তাকে তার্গেট করে মঈন বাহিনী। শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাকে আক্রমণের পরিকল্পনাও চলছিল।

হত্যাকাণ্ডের পরপরই আসামিরা বিভিন্ন পথে বাংলাদেশের সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তারা ব্যর্থ হয়। পরে ভেঙে ভেঙে নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ঢাকা জেলা অতিক্রম করে নারায়ণগঞ্জে আশ্রয় গ্রহণ করে তারা।

তাদের ধরতে র‍্যাব সদস্য তিনটি স্থানে অভিযান চালায়। শেষে বুধবার ঢাকার শ্যামলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শাহীকে। ওই দিনই রাহিম গ্রেপ্তার হন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রাহিম এবং মো. শাহী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয় র‍্যাব।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরআই