মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় বাবা-মা

কুমিল্লায় জমি নিয়ে বিরোধে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে নির্যাতনের কারণে তার নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী। 

এর আগে রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের পাথুরিয়াপাড়ার সোহেল আরমানের স্ত্রী শিল্পী আরমানকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সোমবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি ছেলে সন্তান প্রসব করেন। তবে দুই ঘণ্টা পরই নবজাতকের মৃত্যু হয়।

সোহেল আরমান অভিযোগ করেন, বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা মামা আবুল কালাম ড্রাইভারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাদের বিরোধ চলছে। এর জেরে কালামের পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় তাদের ওপর হামলা করেছে। এ নিয়ে থানায় চারটি জিডি করা হয়েছে। সর্বশেষ ৪ ফেব্রুয়ারি মারধরের ঘটনায় একটি জিডি করেন সোহেল। এতে কালামের পরিবারের লোজজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে রোববার সন্ধ্যায় শিল্পীর পেটে লাথি মারাসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে।

শিল্পী জানান, কালামের স্ত্রী শাহনাজ তাকে মারধর ও পেটে লাথি মারেন। এতে গর্ভের সন্তান অসুস্থ হয়ে ভূমিষ্ট হওয়ার পরই মারা যায়। তার সন্তানের মৃত্যুর জন্য তিনিই দায়ী। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন শিল্পী। 

এর আগে মৃত সন্তান কোলে নিয়ে শিল্পী ও তার স্বামী দিনভর পুলিশ ফাঁড়ি, থানা, আদালত ও সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। প্রত্যেক জায়গা থেকেই তাদের ফেরত পাঠানো হয়। শেষে সন্ধ্যায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করে। শিল্পী বাদী হয়ে কালাম, তার স্ত্রী শাহনাজ, মেয়ে লিমা, ছেলে শরীফ ও আরিফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। 

এতে বলা হয়, শাহনাজ অন্তঃসত্ত্বা শিল্পীর পেটে লাথি মারলে তার প্রসববেদনা শুরু হয়। রাতভর তীব্র যন্ত্রণা শেষে সোমবার ভোরে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন।

কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে রাতেই মামলা হবে। মরদেহ নিয়ে শিশুটির বাবা-মা বর্তমানে থানায় আছেন। 

ইশতিয়াক/আরএআর/