আবারও চাকরির দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাহীন আলম।রোববার (১৭ জুলাই) ঝিনাইদহ জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তিনি অনশন শুরু করেন। সরকারিভাবে যতক্ষণ না তিনি একটা চাকরির নিশ্চয়তা পাচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এক ফোঁটা পানিও পান করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে একটা মাইক দিয়ে তিনি তার আবেদন জানাচ্ছেন। তিনি দাবি করছেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির আবেদন করছেন। কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে কোনো চাকরি তিনি পাচ্ছেন না। এর আগেও তিনি একই জায়গায় অনশন করেছেন। তখন জেলা প্রশাসকের চাকরির আশ্বাসে অনশন স্থগিত করেন। কিন্তু তাকে বেসরকারি চাকরির অফার করা হয়েছিল। 

শাহীন আলম বলছেন, সরকারি চাকরি যদি নাই হবে, তাহলে কেন সরকার লেখাপড়ার সুযোগ দিল।

তিনি বলেন, সংবিধানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এর ধারা (১) দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা দিয়েছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তাহার প্রতি বৈষম্য করা বা তাহাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। বিভিন্ন দপ্তরে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অবহেলা ও অর্থের কাছে হার মানতে হচ্ছে। যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারি চাকরির দাবি জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি।

শাহীন বলেন, গত ৯ মে একই স্থানে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চাকরির দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছিলাম। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করে প্রায় ৬৬ দিন হলেও কোনো লাভ হয়নি। তাই আবারও একই দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করছি। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হলেও অনশন কর্মসূচি ভঙ্গ করব না।

শাহীন আলম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে। ২০১৫ সালে এইচএসসি পাসের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হন এবং ২০১৯ সালে সেখান থেকে সফলতার সঙ্গে অনার্স শেষ করেন। বর্তমানে তিনি মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। শাহীন আলম লেখাপড়ার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

আল মামুন/এমএএস