রাজবাড়ীতে ২০ হাজার গ্রাহকের ৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান 'জেকা বাজার' এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাবিউল্লাহ খান জাবেরকে নিয়ে অভিযান চালিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

রোববার (১৭ জুলাই) বিকেলে রাজবাড়ী পৌর শহরের নান্নু টাওয়ারের ৩য় তলায় জেকা বাজারের কার্যালয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সিআইডি রাজবাড়ী কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান আবুল হোসেন, পরিদর্শক জিল্লুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দীর্ঘ ১০ মাস আত্মগোপনে থাকার পর রাজবাড়ীর সিআইডি পুলিশ ফরিদপুরের আলীপুর এলাকা থেকে গতকাল শনিবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত জাবিউল্লাহ খান জাবের রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের গঙ্গানন্দপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে।

রাজবাড়ী সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, স্বল্প মূল্যে মোটরসাইকেল, প্রসাধনী সামগ্রীসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় জেকা বাজার। জেকা বাজারের মালিক জাবের উল্লাহ রাজবাড়ী জেলার প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ৬০-৭০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব টাকা দিয়ে পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে ঢাকা, রাজবাড়ী শহর, কালুখালীতে জমি ও ফ্লাট কিনেছে প্রতিষ্ঠানটির মালিক। 

তিনি আরও জানান, গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়াসহ টালবাহানা করছে। জেকা বাজারে টাকা বিনিয়োগ করা গ্রাহকরা তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। প্রতারিত গ্রাহকদের দায়েরকৃত মামলাটির তদন্তভার সিআইডিকে দেয়া হয়। তাকে গ্রেপ্তার করার পর রাজবাড়ী শহরের নান্নু টাওয়ারে জেকা বাজার অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আগামীকাল সোমবার বেলা ১১টায় পুনরায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এদিকে, কালুখালী উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে ছেলে জাবি উল্লাহ খান জাবেরকে অনৈতিক কার্যকলাপ, মাদক সেবনের অভিযোগ ও রাজবাড়ী আদালতের নোটারি পাবলিকের মাধ্যমেও ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২১ সালের (২ নভেম্বর) রাজবাড়ী শহরের পান্না চত্বরের নান্নু টাওয়ারে জেকা বাজার লিমিটেডের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে রাজবাড়ী জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। ওই সময় বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের ভেতরে থাকা পণ্য নকল হওয়ায় তাদের ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। তখন থেকেই পলাতক ছিলেন জাবের।

মীর সামসুজ্জামান/এমএএস