কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের সঙ্গে বাস শ্রমিকদের বেপরোয়া আচরণে উদ্বেগ জানিয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন ও হোটেল মালিকরা। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

রোববার বেলা ১১টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে এক সভায় আবাসিক হোটেল মালিক সংগঠনের পাশাপাশি ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব টোয়াক, কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম), ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশন, ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমবায় সমিতি, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টের মালিকরা অংশগ্রহণ করেন। 

এসময় তারা গত ১৬ জুলাই কুয়াকাটার তুলাতলী অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে এক পর্যটক পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাস শ্রমিকদের লাগাম টানার বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। 

সভায় বরিশাল ও পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা রুটে চলাচলকারী বাস শ্রমিকদের বেপরোয়া আচরণের বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পায়। এসময় জেলা প্রশাসকের কাছে ছয় দফা দাবি পেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সমস্যা সমাধানে বাস মালিকদের আন্তরিকতা প্রত্যাশা করে বক্তারা বলেন, কুয়াকাটা পর্যটনকে রক্ষায় বাস শ্রমিকদের মারমুখী স্বভাব পরিবর্তনে ব্যর্থ হলে তারা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন।

 কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লবের সভাপতিত্বে হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরীফ, কুয়াকাটা হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম হাওলাদার, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব টোয়াকের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার, কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (কুটুম) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির, ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু, ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি জনী আলমগীর, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কলিম মাহমুদ, কুয়াকাটা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাঈদ এবং আল হেরা হোটেলের মালিক আলহাজ আ. মান্নান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

দাবিসমূহ হচ্ছে 
১। গত ১৬ জুলাই কুয়াকাটার অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে পর্যটক পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। 
২। পর্যটকদের সঙ্গে কোনো বাস শ্রমিক দুর্ব্যবহার করতে পারবে না, প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
৩। কুয়াকাটা থেকে পটুয়াখালী ও বরিশালগামী যাত্রীদের পছন্দমতো বাসে চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
৪। পটুয়াখালী থেকে যাত্রা করে আমতলী ও কলাপাড়ায় যাত্রাবিরতী না করা।
৫। পটুয়াখালীতে বাস মালিকদের চেকপোস্টের নামে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা।
৬। কুয়াকাটায় গন্তব্য না থাকলেও অন্যান্য স্টেশনে গমনকারী বাসে ‘কুয়াকাটা’ লেখা তুলে দিতে হবে।

দ্রুতই লিখিতভাবে এ দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করার কথাও জানিয়েছেন হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরীফ। 

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই এক পর্যটক পরিবারের ওপর বরিশাল থেকে কুয়াকাটাগামী একটি বাসশ্রমিকদের হামলার ঘটনায় পর্যটকের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ও একটি মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছাপা হলে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নজরে আসে। 

কাজী সাঈদ/এমএএস