লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার দশমিক ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানির শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা।

সোমবার (১ আগস্ট) রাত ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ২১ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। রাত ৯টা থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। এ কারণে ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, কয়েক দিনের গরমের পর টানা বৃষ্টি শুরু হয়। এতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বেড়ে যায়। যদিও কয়েক দিন আগে তিস্তার পানি একেবারে শূন্য ছিল। সেটি বেড়ে হাতীবান্ধার কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে জেলার পাঁচটি উপজেলার ভোটমারী, তুষভান্ডারের আমিনগঞ্জ, কাকিনা; পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম; হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী; সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

অনেকের ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানির শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। হঠাৎ পানি বাড়ার ফলে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম বলেন, হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে। তাই তীরবর্তী মানুষের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের তালিকা করে ত্রাণ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্ট) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। তবে ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর রাতে তিস্তার পানি কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/এনএ