সমুদ্র নগরী কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সঙ্গে প্রায়ই শুটকি নিয়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। সবশেষ মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ভ্রমণে আসা এক পর্যটকের কাছে পচা ও নিম্নমানের শুটকি বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে রুবেল (২৫) ও সাইফুল (৩০) নামে দুই জনকে আটক করে টুরিস্ট পুলিশ।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার নড়েচড়ে বসেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন। তর্কাতর্কি বা হয়রানির ঘটনা রোধে শনিবার (৬ আগস্ট) সুগন্ধা পয়েন্টের শুটকি মার্কেটে সতর্কতামূলক অভিযান চালায় ট্যুরিস্ট পুলিশ। এ অভিযানকে সাধুবাদ জানায় শুটকি কিনতে আসা পর্যটকরা।

ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক রাকিব হাসান বলেন, আমরা সাধারণ শুটকি কোনটা কি রকম জানি না। এ সুযোগে শুটকি বিক্রেতারা আমাদের নিম্নমানের (পচা) শুটকি দিয়ে অতিরিক্ত দাম আদায় করে। এতে আমরা এক প্রকার প্রতারণার শিকার হই। ট্যুরিস্ট পুলিশ যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমাদের মতো পর্যটকদের জন্য।

শাকিরা ইয়াসমিন নামের আরেক পর্যটক বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ যেভাবে মনিটরিং করছে এটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক। এভাবেই প্রতিদিন মনিটরিং করলে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করার সুযোগ পাবে না শুটকি ব্যবসায়ীরা। এটা পর্যটন খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শুটকি দোকানি আবছার বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লাভের জন্য পচা ও নিম্নমানের শুটকি পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে প্রতারণা করেন। তাদের কারণে আমাদের মতো বড় ব্যবসায়ীদের বদনাম হয়। ট্যুরিস্ট পুলিশের এই অভিযানের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা আর প্রতারণা করার সুযোগ পাবে না।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, কিছুদিন আগে ওসিকুর রহমান নুর নামে একজন পর্যটক শুটকি কিনে প্রতারিত হয়েছেন জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। বিষয়টি নজরে এলে তাৎক্ষণিক ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার দেওয়া তথ্যে সুগন্ধা বিচ রোডের পাশে অবস্থিত শুটকির ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়ে পচা ও নিম্নমানের শুটকিসহ রুবেল ও সাইফুলকে আটক করা হয়। এরপর আমরা অভিযান শুরু করি। কেউ যদি পর্যটকদের সঙ্গে কোনোরকম প্রতারণা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ এই শুটকি কক্সবাজার পর্যটন শিল্পকে ব্র্যান্ডিং করে। সুতরাং কক্সবাজারে আসা পর্যটকের সঙ্গে প্রতারণা করার কোনো সুযোগ নেই বলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এর আগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম একটি টিম নিয়ে কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্টে অবস্থিত সব দোকান পরিদর্শন করেন ও পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন।

সাইদুল ফরহাদ/এসএসএইচ