লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পুত্রবধূর শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ফাতেমা বেগম (৫৫) নামে এক নারী কীটনাশক পান করে মারা গেছেন। রোববার (০৭ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার উত্তরচর আবাবিল ইউনিয়নের দক্ষিণ গাইয়ার চর গ্রামের আখনবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

ফাতেমা বেগম আখন বাটির মৃত আবদুল আলীর স্ত্রী। অভিযুক্ত সেলিনা কাতার প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ইসমাইল দীর্ঘদিন সৌদি আরব ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি কাতারে চাকরি করতে যান। এর মধ্যে তার স্ত্রী সেলিনা বিভিন্ন অজুহাতে মায়ের সঙ্গে কলহে জড়িয়ে পড়েন। কারণে-অকারণে পুত্রবধূ শাশুড়িকে মারধর করতেন। রোববার সকালে ইসমাইলের পাঠানো সংসার খরচ নিয়ে তারা বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে পুত্রবধূ তার শাশুড়িকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন।

পূত্রবধূ মারধর করায় অপমান সহ্য করতে না পেরে শাশুড়ি ঘরের দরজা বন্ধ করে কীটনাশক পান করেন। দুপুরের দিকে ফাতেমার ভাই প্রবাসী নুরুল আমিন তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি বোনের সঙ্গে কথা বলতে ফোন নিয়ে যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বলেন। কিন্তু ফোন নিয়ে গিয়ে তিনি দরজা বন্ধ দেখতে পান। ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় জানালা দিয়ে দেখেন, ফাতেমা খাটে পড়ে আছেন। তার মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এক পর্যায়ে ফাতেমার মেয়ে আমেনা বেগম ও ভাই সবুজ হোসেন জানালা দিয়ে দরজার ছিটকানি খুলে ঘর থেকে মরদেহ বের করেন। 

হায়দারগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) সুরেনজিৎ বড়ুয়া বলেন, পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয়েছে। পূত্রবধূর হাতে নির্যাতনের ঘটনায় অপমান সহ্য করতে না পেরে বৃদ্ধা কীটনাশক পান করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত সেলিনা পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এসপি