বঙ্গোপসাগরে বিদ্যমান লঘুচাপ ও দক্ষিণাঞ্চলের ওপর সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার পুরো নিঝুম দ্বীপ জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৯ ওয়ার্ডের ৩০ হাজার মানুষ। 

গত কয়েকদিনের অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িগুলোতে। বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় নিঝুম দ্বীপ। জোয়ারে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, বন্দর কিল্লা, নামার বাজার, ইসলামপুর ও মোল্লা গ্রামসহ পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি।
 
নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দা মো. শাহিন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জোয়ারের ফলে মেঘনা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় সব তলিয়ে গেছে।  ফলে ভোগান্তিতে রয়েছেন পুরো ইউনিয়নের ৩০ হাজার বাসিন্দা।

আরেক বাসিন্দা ইয়াছিন আরাফাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, জোয়ারে মাছের ঘের ভেসে গেছে। আমন ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। যদি বেড়িবাঁধ থাকতো তাহলে এতটা দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। জনজীবন বিপর্যস্ত। 

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিঝুমদ্বীপে ৩০ হাজারের বেশি লোকের বসবাস। ইউনিয়নটি সাগরের একবারে কাছে হলেও নেই কোনো বেড়িবাঁধ। জোয়ারের সময় চারদিক দিয়ে একসঙ্গে এ ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। আমরা সবাই পানিবন্দি হয়ে আছি। এখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নুরুল আলম ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পূর্ণিমা তিথির প্রভাবে প্লাবিত হয়েছে। এতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্চতায় পানি উঠেছে। আশা করি, দুই একদিনের মধ্যে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খোঁজ রাখছি, কোথাও কোনো ক্ষতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

হাসিব আল আমিন/আরএইচ