আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন সারা বিশ্বের শোষিত মানুষের নেতা। বঙ্গবন্ধু ছিলেন জাতীয় মানের নেতা। পরাজিত শক্তি জাতীয় মানের নেতাকে দেখেও ভয় পেত।

সোমবার (১৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ৩টায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজ জ্বালানি নিরাপত্তার কথা বলি আর যা-ই বলি, বঙ্গবন্ধু সবকিছুই আমাদের জন্য করে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শোষণনের হাত থেকে আমাদের মুক্তি দিয়ে গিয়েছিলেন। দেশকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যা যা করার দরকার, তাই-ই করে দিয়ে গিয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের জন্য তিনি সব দলের সমন্বয়ে সরকার গঠন করেছিলেন।

তিনি যত ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, তার সুফল আজ আমরা পাচ্ছি। ২১ বছরের বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল এ দেশের দোসররা। তারা চেয়েছিল মুজিব রক্তের এতটুকু অবশিষ্ট অংশও যেন না থাকে।

তিনি বলেন, আজ বৈশ্বিক একটি সমস্যা চলছে। কোভিড থেকে বেরিয়ে আসার পথে বৈশ্বিক যুদ্ধের ফলে সারা বিশ্বে জ্বালানি ও খাদ্যসংকট চলছে। বিশ্বের পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদেরও চলতে হবে। তবু আমাদের অর্থনীতি অবস্থা এখন অনেক ভালো আছে। প্রতিবার নির্বাচনগুলো এলেই একটি ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তারা চিরজীবনই ষড়যন্ত্রকারী।

দীপু মনি বলেন, যদিও বলা হয়, জেনারেল জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যদি তা-ই হবে এবং তিনি যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতেন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের এবং আমাদের প্রাণের স্লোগান, যে স্লোগান দিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, এত রক্তের বিনিময়ে সেই ‘জয় বাংলা’ তিনি নিষিদ্ধ করতেন না। বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করা হতো না।

৭ মার্চের যে অবস্মরণীয় ভাষণ দিয়ে জাতি ও রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে, পৃথিবীতে অন্যান্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, সে ভাষণ নিষিদ্ধ হতো না। বাংলাদেশ বেতার, রেডিও বাংলাদেশ হতো না। এমনকি তারা জাতীয় সংগীতকেও পরিবর্তন করার চেষ্টা চালিয়েছিল।

মন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি কী করে স্বাধীনতার চেতনাকে একে একে ভূলণ্ঠিত করা হয়েছে। ধর্মভিত্তিক অপরাজনীতিকে আমাদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। তাই নয়, যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে, তাদের এনে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছে।

দীপু মনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের যারা ক্ষমতায় বসায়, তারা আর যা-ই হোক, স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হতে পারে না। আমাদের শহীদের রক্তের অবমাননা ও বেইমানি করে তারা এই কাজগুলো করেছে। একই সঙ্গে তারা ২১ বছর বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নিয়ে জঘন্য অপপ্রচার করেছে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. কামরুজ্জামান, পিবিআই পুলিশ সুপার খন্দকার নূর প্রমুখ।

এনএ