হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি মোহাম্মদ উল্যা

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় আলমগীর (২১) নামে এক ইজিবাইক চালককে নারীর প্রলোভন দেখিয়ে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই করা হয়েছে।

১৭ মাস পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে হত্যায় জড়িত তিন যুবককে গ্রেফতার করে স্বীকারোক্তি নিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ উল্যা।

এসপি বলেন, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই চুনারুঘাট সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গহীন বন থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিচয় না পাওয়ায় আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ হিসেবে তাকে দাফন করা হয়।

হত্যার পর থেকে মরদেহের পরিচয় শনাক্তের জন্য কাজ করছিল পুলিশ। এরই মধ্যে পুলিশ জানতে পারে মাধবপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামের রহমত আলীর ছেলে আলমগীর নিখোঁজ রয়েছেন। পরে সন্দেহবশত আলমগীরের বাবার ডিএনএ নিয়ে মরদেহের ডিএনএর মাধ্যমে পুলিশ নিশ্চিত হন উদ্ধারকৃত মরদেহ রহমত আলীর ছেলে আলমগীরের।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরিচয় শনাক্তের পর আলমগীরের মোবাইল কলের সূত্র ধরে ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর মাধবপুর উপজেলার উত্তর বেজুরা গ্রামের ছফন উদ্দিনের ছেলে মুসলিম মিয়াকে (২৭) গ্রেফতার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তিতে ঘটনায় জড়িত একই উপজেলার খড়কি গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে রুকন মিয়া ও বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্নপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে সোহেল মিয়াকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়। হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শুক্রবার ও রোববার আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, আসামিরা আদালতে স্বীকার করেছেন ঘটনার আগের দিন মাধবপুর বাজারে লোকনাথ হোটেলে বসে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে আলমগীরকে নারীর প্রলোভন দেখয়ে সাতছড়িতে নিয়ে যান। সাতছড়িতে নেয়ার পর নারী গভীর বনে রয়েছেন বলে তাকে নিয়ে যান। এরপর আলমগীরকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ফেলে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান আসামিরা। পরে ইজিবাইকটি বানিয়াচঙ্গের এক ব্যক্তির কাছে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন আসামিরা।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, আসামিরা নিহত ইজিবাইক চালকের পূর্বপরিচিত। তারা জানতেন আলমগীরের নারীর প্রতি লোভ রয়েছে। এজন্য নারীর প্রলোভন দেখিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আশরাফ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মোতালেব।

এএম