প্রধানমন্ত্রী কেন তাদের চায়ের দাওয়াত দেন, প্রশ্ন শামীম ওসমানের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আপনি কাদের চায়ের দাওয়াত দেন? যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাদের আপনি চায়ের দাওয়াত দিতে পারেন না। যারা আপনাকে মারতে ২১ বার চেষ্টা চালিয়েছে তাদের আপনি চায়ের দাওয়াত দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে, যারা একসঙ্গে দেশের ৬৫ জেলায় বোমা হামলা করবে তাদের সঙ্গে কেন আমাদের গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে? তাদের কেন আমরা চা খাওয়াব?
বিজ্ঞাপন
রোববার (২১ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার তল্লা এলাকায় শোকাবহ আগস্ট মাস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, আজ থেকে ২১ বছর আগে নারায়ণগঞ্জে একটা ঘটনা ঘটেছিল। ২০০১ সালে ১৬ জুন বোমা মারা হয়েছিল। নিজের কাছে অপরাধবোধ হয়, মাফ করতে পারি না। অপরাধ করেছিলাম স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে, মুক্তিযোদ্ধার ঘরে জন্ম নিয়ে। অপরাধ করেছিলাম কারণ সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে শিখেছিলাম। শুধু বলেছিলাম এ নারায়ণগঞ্জের পবিত্র মাটিতে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রবেশ নিষেধ। এই অপরাধে আওয়ামী লীগ অফিসে আরডিএক্স দিয়ে হামলা করা হলো। আমাদের হাত পা বিকল হয়ে গেল। আমাদের অপরাধ কী? সেই হামলায় আমার ২০ জন ভাই শহীদ হলো। আমি বলিনি আমাকে বাঁচাও, কষ্ট হচ্ছে। আমি বলেছি শেখ হাসিনাকে বাঁচান। কারণ আমি উপলব্ধি করেছিলাম আমি মারা গেলে কিছু হবে না, তবে শেখ হাসিনা না থাকলে বাংলাদেশ থাকবে না।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, কয়েকদিন পর পর বিএনপি নেতারা বলছেন- রাজপথ দখল করবেন। আরে করেন না দখল। কবে দখল করবেন সেই অপেক্ষায় আছি।
রাজাকারের সন্তানদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের খেলা হবে মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন, এত দিন চুপ ছিলাম। ধৈর্যের একটা সীমা আছে। আমরা বসে আছি তোমাদের সঙ্গে খেলার জন্য। রাজাকারের সন্তানদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের খেলা হবে। সে খেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরাই জিতবে।
এই সংসদ সদস্য বলেন, আমরা তো ক্ষমতায় আছি। কাউকে তো মারলাম না, ধরলাম না। কারণ শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমি সব হারিয়ে ধৈর্য ধরেছি। তোমরাও ধৈর্য ধরো। আমি জাতির পিতার কন্যার উদ্দেশে বলছি ধৈর্যের সীমা আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মেরে ফেলা হয়েছে। তার কন্যাকে বেঁচে যাওয়ার অপরাধে ২১ বার মারার চেষ্টা করা হয়েছে।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়ে মারেন, লজ্জা করে না? ২৫ জন মানুষ পুড়িয়ে মেরে আবার বলেন জনগণের জন্য রাজনীতি করেন। ঘুমন্ত অবস্থায় গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে মারলেন, আপনারা মানুষ?
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এখন আওয়ামী লীগের সম্পদ না, তিনি বাংলাদেশের সম্পদ। শেখ হাসিনা এই দেশের আগামী প্রজন্মের স্বপ্ন।
ফতুল্লা থানা যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লবের সভাপতিত্বে শোক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক সেরাজুল হক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা এহসানুল হক নিপু, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু প্রমুখ।
আবির শিকদার/এমএইচএস