শেরপুরে বেসরকারি একটি স্কুলের টয়লেট থেকে রিমন হাসান নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে জেলার সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ এলাকার ড্যাফোডিল প্রিপারেটরি অ্যান্ড হাই স্কুলের একটি টয়লেট থেকে ওই ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
 
নিহত রিমন পার্শ্ববর্তী খুনুয়া গ্রামের মো. সাগর মিয়ার ছেলে এবং ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ভ্যানচালক সাগর মিয়া ও মা রশিদা বেগমের চার ছেলের মধ্যে রিমন দ্বিতীয়। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে স্কুলে পরীক্ষা দিয়ে বিকেলে মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে বাড়ি যায়। খাওয়া-দাওয়া করে আবার বাইরে বের হয় রিমন। সে মাঝে-মধ্যেই না বলে নানা বাড়ি গিয়ে থাকত। তাই রাত পেরিয়ে গেলেও তার বাবা-মা কোনো খোঁজ নেননি।

পরদিন সকালে ড্যাফোডিল প্রিপারেটরি অ্যান্ড হাই স্কুলের নাইট গার্ড শেখ ফরিদ স্কুলের টয়লেটে হাত-মুখ ধুতে গিয়ে নগ্ন ও কাদামাটি মাখা অবস্থায় এক কিশোরের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তিনি স্কুলের পরিচালককে খবর দেন। তিনি এসে সদর থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিমনের মরদেহের সুরতহাল তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পিবিআই, সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ও ডিবি পুলিশের পৃথক টিম।

রিমনের মা রশিদা বেগম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। তিনি বলেন, বাবারে, তুই আমারে পাগল বানাইয়া গেলি। আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিছুদিন ধরে পার্শ্ববর্তী একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রিমনের। সে ওই মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলত। ওই মেয়েই ডেকে নিয়ে আমার ছেলেডারে মাইরা ফালাইছে। 

বাবা সাগর মিয়া, তার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। স্কুলের পরিচালক চান মিয়া ও শিক্ষকরা জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে।

এলাকার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভীমগঞ্জে ইদানীং খারাপ কাজ বেড়ে গেছে। এ কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।  

সিআইডি ক্রাইমসিনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউসুফ বলেন, রিমনের শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকায় ধারণা করা হচ্ছে তাকে কোনো আক্রোশ থেকে হত্যা করা হয়েছে। মনে হচ্ছে একাধিক লোক তাকে হত্যা করেছে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হান্নান মিয়া বলেন, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। ওই ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আর আমাদের তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুতই আসামি ধরা পড়বে। 

আরআই