একই স্কুলে এক টানা ২২ বছর দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে গেলেন প্রধান শিক্ষক আছমা খাতুন। রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এ সময় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি প্রিয় শিক্ষকও।

জানা গেছে, ২০০০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সদরের আজিজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন আছমা খাতুন। এরপর কেটে গেছে টানা ২২ বছর। 

অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক শাহ আজিজুর রহমান লিটন, সহকর্মী ফজলুর রহমান, আকরাম হোসেন জাকারিয়া, সুলতানা ফেন্সি, প্রাক্তন ছাত্র আজাদ নুরসহ অনেকে স্মৃতিচারণ করেন। তারা বলেন, আশির দশকে তেঁতুলিয়া উপজেলার মেধাবী ও সংস্কৃতিমনা ছাত্রী ছিলেন আসমা খাতুন। তিনি শিক্ষকতায় যোগদানের পর থেকে স্কুলের পাঠদানের পরিবেশ বদলে যায়। মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি হতে থাকে। নিজ গুণে তিনি একজন গুণী শিক্ষক হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘ ২২ বছর একটি স্কুলে দায়িত্ব পালন করেছেন। 

জানা গেছে, ১৯৮১ সালের ৫ নভেম্বর সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন আসমা খাতুন। এ পর্যন্ত ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। এর মধ্যে মন্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৩ মাস, মাঝিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬ বছর, তেঁতুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ বছর, জামুরীগুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রায় এক বছর ও আজিজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২২ বছর। শিক্ষকতা জীবনের ৪২ বছরে গড়েছেন অনেক সোনার ছাত্র, বদলে দিয়েছেন পাঠদান, কিংবদন্তী শিক্ষক হয়ে উঠেছেন সবার কাছে।

স্কুলের সাবেক সভাপতি জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই শিক্ষকের শিক্ষকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন- উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ করিম সিদ্দিকী, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ইউনুস আলী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোখলেসুর রহমান, আবু সাঈদ মিয়া, সাইদুর রহমান বাবলু প্রমুখ।

এসপি